কোদনডস্বরূপ

ইউক্যালিপটাস আর গাম ট্রীর আড়ালে মেপলগাছগুলি পাতা ঝরায়।বাদামী ভঙ্গুর পাতা হাওয়ায় পাক খায়। ঈষত্ উঁচুতে উঠে মাটিতে পড়ে।ধুলো হয়।বাসী খবর যেমন।

অস্ট্রেলিয়ার পাবলিক স্কুলে স্ক্রিপচার ক্লাস চলছে গত এক শতক।অপশনাল ক্লাস। স্কুলে ভর্তির সময় ফর্মে অভিভাবককে লিখে দিতে হয় ছাত্রটি স্ক্রিপচার ক্লাস অ্যাটেন্ড করবে কি না, কোন্ ধর্মের ক্লাস করবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেই মতো ব্যবস্থা নেন।
অল্পবয়সী যে ছাত্ররা স্ক্রিপচার ক্লাসে যায় না , কম বেশি আধঘন্টা সময়টুকু তারা ছবি আঁকে, খেলে, গল্প শোনে। বয়সে বড় ছাত্ররা হয়তো লাইব্রেরিতে কাটায় সেসময়।

নিউ সাউথ ওয়েল্সএর ফেডারেশন অফ পেরেন্টস অ্যান্ড সিটিজেন অ্যাসোসিয়েশনের এতে আপত্তি; স্ক্রিপচার ক্লাস না করা ছাত্রদের জন্য এথিক্স ক্লাসের দাবী তুলেছেন তাঁরা। নবীন "নন-স্ক্রিপচার' যারা আধঘন্টা ধর্মকথা না শুনে ছবি আঁকে- সংখ্যায় ক্রমে বাড়ছে। তাই এঁরা চিন্তিত।কে না জানে ধর্মের ক্লাস অ্যাটেন্ড করলেই মূল্যবোধ তৈরী হয়!
ফেডারেশনের অ্যাক্টিং প্রেসিডেন্ট ডিয়ান জিবলিন জানাচ্ছেন বহু অভিভাবকই ছেলেপিলেদের জন্য "নিউ সোর্স অফ মরাল টিচি'ং চাইছেন।ডিয়ান আরো বলছেন, এই অভিভাবকরা মূলত: "এথেইস্ট, অ্যাগনসটিক অথবা নন ক্রিশ্চিয়ান', এঁরা সন্তানের জন্য "নন-থিওলজিকাল ইনস্ট্রাকশন ইন এথিকস ' চান।

বছর তিন আগে, সেন্ট জেমস এথিকস সেন্টার থেকে এই ধরণের একটি প্রস্তাব তত্কালীন শিক্ষামন্ত্রীকে পাঠানো হয়। সেটি খারিজ হয়ে যায়। এবারে ফেডারেশন অনেক সমর্থন যোগাড় করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রকের পক্ষ থেকে অবশ্য জোর দিয়ে বলা হয়েছে 'ভ্যালুস ' আর 'এথিকস' স্কুলপাঠ্যক্রমেই নিহিত; ধর্মশিক্ষার পরিবর্ত হিসেবে তা দেখা হচ্ছে না।

এদিকে, পরীক্ষায় চিটিং এবং প্লাজারিজম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
বোর্ড অফ স্টাডিস এ'জন্য ইয়ার টেনের ছাত্রদের ২০ ঘন্টার এথিকস কোর্স শুরু করছেন শিগ্গিরি।
অসাধু ছাত্র ছাত্রীদের ক'জন স্ক্রিপচার ক্লাসে যান, কজন ছবি আঁকেন সেই সময়টুকু, ক'জনের অভিভাবক এথেইস্ট -জানা যায় নি।
জানা যায় না।

শুধু, নিত্যদিনের আসা যাওয়ার পথে চোখে পড়ে একটি পাব-চওড়া উঠোন, গথিক স্ট্রাকচার-হুবহু একখানি অ্যাবে-সেই অ্যাট্রিয়াম, সেই ক্লয়েস্টার-মঙ্ক বা নানদের বদলে ফূর্তিবাজ কিছু মানুষ, গান, হুল্লোড়, ঘাড়ে গর্দানে বাউন্সার।
দ্বাদশ শিবলিঙ্গের বিখ্যাত চত্বরে প্রসাদের চ্যাঙাড়ি হাতে তিলককাটা ভক্তকুলের পরিবর্তে গঙ্গাতীরে বিশাল কার্নিভাল জনতা প্রত্যক্ষ করি। মনে মনে।
কল্পনায় আকাশ ঢাকে।
তারপর আবার পাতা ঝরে, পাতা ঝরে।

Comments

Popular posts from this blog

চরাচরের পাখিরা

কোলক্লিফ, ২০২৩

সলস্টিস