হেমন্তকথা
স্কুলের দু সপ্তার ব্রেক শেষ হ'তে এখনও কদিন বাকি-পাবলিক লাইব্রেরি থেকে 'প্রিমিয়ার রিডিং চ্যালেঞ্জ'এর বই ইস্যু হচ্ছে প্রচুর।
সাক্ষরতা বাড়াতে আর বাচ্চাদের বইমুখো করতে অস্ট্রেলিয়ার স্টেট গভর্নমেন্টের এই উদ্যোগের বয়স পাঁচ, বাচ্চাদের বয়স পাঁচ থেকে তেরো-কিন্ডারগার্টেন থেকে ক্লাস এইট।
সরকারী হিসেব অনুযায়ী, প্রথম বছর ছত্রিশহাজার স্কুলছাত্র অংশ নিয়েছিল উদ্যোগে, গতবছর দুশোছাব্বিশহাজার।এ'বছর আরো বাড়বে, শুনছি।
কিন্ডারগার্টেন থেকে ক্লাস এইট অবধি চারটি গ্রুপ। প্রতি গ্রুপের জন্য আলাদা বইএর লিস্টি। পাবলিক অথবা স্কুল লাইব্রেরি থেকে লিস্টি অনুযায়ী বই নেওয়া যাবে, লগ রাখতে হবে বাবা-মা বা টিচারকে।
লিস্টি থেকে বছরে কুড়িটি বই পড়তেই হবে ক্লাস থী থেকে এইটকে। শেষ গ্রুপটির জন্য এই সংখ্যা চল্লিশ আর তাদের বইলি পড়ে শোনানো যেতে পারে।
তালিকার কিছু বই হাতে এসেছে- k to 2 ছাপ, কিন্ডারগার্টেন থেকে ক্লাস টুর বাচ্চারা পড়বে।
তার মধ্যে একটি বই 'Our Granny' ।
লেখক মার্গারেট ওয়াইল্ড। জ্যাকেটে বলা আছে, ইনি অস্ট্রেলিয়ার একজন উদীয়মান 'পিকচার বুক' লেখক, এঁর পাঁচখানি বই চিল্ডেন্র'স বুক কাউন্সিল অফ অস্ট্রেলিয়াতে শর্টলিস্টেড।
জুলি ভাইভাস ইলাস্ট্রেটর-ইনি স্বদেশ ও বিদেশে জনপ্রিয়, বহু পুরস্কারে ভূষিতা।
বইটি শুরু হয়েছে চমত্কার। 'Some grannies live in...
units
big old houses
old people's homes
...
caravans
farm houses...
nursing homes
or nowhere at all'
পরের পাতায় শিশুটি হোঁচট খায়- 'Some grannies have...
thin legs
fat knees
bristly chins...
or big soft laps'
সঙ্গে ইলাস্ট্রেশনে, এক বিপুলা -টুইজার আর আয়না হাতে, চিবুক ঈষত্ উত্থিত, হাঁটু অবধি টোনো প্যান্টুল, সুবিশাল জানুদেশ।
তার পরের পাতায়- 'Our granny has a wobbly bottom'
খুকীটি বিপুলা মহিলার পশ্চাত্দেশ জড়িয়ে ধরেছে-এমত অলংকরণ।
এবারে শিশুটি 'ইয়াআক' বলে বই ফেলে পালায়- 'Some grannies wear...
jeans and sneakers
trouser suits...
big bras
baggy underpants...'
সাদৃশ্য রেখে ইলাস্ট্রেশন।
শিশুটিকে ধরে এনে আবার পড়তে বসানো হয়। 'Our granny does special exercises
to make her bottom smaller'
সঙ্গের দু'পাতা জোড়া ছবিতে পাঁচ ছ'জন বিশালদেহী ব্যায়ামরতা-নবীন পাঠককে পশ্চাত্দেশ প্রদর্শন করছেন।
এবারে শিশুটি সত্যি দৌড়ে পালায় , তাকে আর পড়তে বসানো যায় না, হয় না।
তাতে কার কি এসে গেল?
নবীন পাঠকের সংখ্যা দুশোছাব্বিশহাজার থেকে তিনশ ছাপ্পান্ন হাজার পূর্ণ একের চার হয়েছে জানব; প্রিমিয়ার মশাইএর হাসিমুখ, হাতে খোলা বই, তাঁকে ঘিরে কচিমুখলি-দেখতে পাবো কাগজে, টিভিতে, কম্পিউটারের স্ক্রীনে।
অ্যানজাক ডেতে ফূর্তি হবে সী বীচে। তাসমানিয়ান ব্ল্যাকউড কফিনে নামহীন সেনানী শুয়ে থাকবেন। আরোহীবিহীন অশ্বটির স্টিরাপে কাটা হাতের মতো বুটজোড়া ঝুলবে।
তবু, চীন -অস্ট্রেলিয়ার নতুন এগ্রিমেন্ট আজকালের মধ্যেই সাক্ষরিত হবে, ইয়েলো কেক কিনেই চলবে চীন।
রণক্ষেত্রে অজস্র পপি ফুটবে অবশ্যই; কেউ দেখবে না।
Comments
Post a Comment