Posts

Showing posts from 2007

পড়শিনগর

মেয়েটি ছবি আঁকে। ছবি তোলেও। এটুকু জানা ছিল। ক্লেয়র কনরয়। আমার পড়শি। দেখা হয় লন্ড্রিতে। সিঁড়িতে। দেখা হয়। কথা হয় কম। মেয়েটি স্বল্পবাক। আমি মুখচোরা প্রবল। একটু হাসি-কুশল বিনিময় -- আজ গরম বেজায় ... বিকেলে বৃষ্টি নামবে ... এই ফিরলেন বুঝি? গত শীতের সকালে মস্ত এক ট্রাক এল বাড়ির দোরগোড়ায়। চারদিক বন্ধ বিশাল রেন্টাল ট্রাক। বাড়ি বদলালে লোকজন যেরকম ট্রাক ভাড়া করে সেরকম। ক্লেয়র সেই ট্রাক নিয়ে বেরোয় প্রায়ই। ছবি তুলতে যায়। কোনওদিন সঙ্গীসহ। কখনও একা। গ্রীষ্মে ওর একজিবিশন। এত বড় ট্রাকে কি এত সরঞ্জাম নেয় -- জিগ্যেস করতে ভুলে যাই। শীত চলে যায়। বসন্তও। ক্লেয়র আমাকে কার্ড দেয় ওর একজিবিশনের -- "লাইট স্পিড -- আ জার্নি অ্যাক্রস সিডনি ইন আ পিনহোল ক্যামেরা।' অবাক লাগে। অ্যাত্ত বড় ট্রাক নিয়ে টই টই, তার সঙ্গে পিনহোল ক্যামেরা -- মেলে না যেন ... আসে শনিবারের দুপুর। ডে স্ট্রিটে গ্যালারিটি। মোরি গ্যালারি। সাদামাটা ব্যবস্থাপনা। দেওয়ালে ফ্রেমহীন ছবিগুলি। আট ফুট বাই তিন ফুট মোটামুটি। সাদা-কালো। প্রতিটি ছবির সঙ্গে সাউন্ডট্র্যাক। এম পি থ্রিতে। ছবি তোলার এক্সপোজারের সমান সময় সাউন্ড ট্র্যাকেরও। ছবিগুলি সিড

প্যাচওয়ার্ক কুইল্ট

"... বরিশালের কৃষকজীবন নিয়ে একটা কিংবদন্তি তখন খুব চালু ছিল। ক্ষেতে বর্ষা নেমেছে, হাঁটু অবধি জল, বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে দুই চাষী ধানের চারার রক্ষণাবেক্ষণ করছে। প্রথমের প্রশ্ন, "ক দেহি, মহারাণী ভিক্টোরিয়া এহন কি করতে আছে?' ... উত্তর, "হে কি আর আমাগো মতো? পানি নামতেই পান্থাভাত খাইয়া কাঁথামুড়ি দিয়া উব্বুত ...'। রোমন্থন অথবা ভীমরতিপ্রাপ্তর পরচরিতচর্চা -- তপন রায়চৌধুরী। ...'The bed itself was decorated with a patchwork quilt of great antiquity; and at the upper end, upon the side nearest to the door, hung a scanty curtain of blue check, which prevented the Zephyrs that were abroad in Kingsgate Street, from visiting Mrs. Gamp's head too roughly' ... Martin Chuzzlewit' -- Charles Dickens. ১ পাড়ার কমিউনিটি নোটিশবোর্ড। পিয়ানো শিক্ষক চাই ... অভিজ্ঞ বেবি সিটারের জন্য এই নম্বরে যোগাযোগ করুন ... যোগ শিখতে আসুন কিংবা ক্যারাটে ... মেদ কমাতে চান? ... আগামী পরশু গ্যারাজ সেল ... কুকুরছানা হারিয়ে গেছে ... একখানি কুইনসাইজ খাট জলের দরে বিক্রি হবে ... তারই মধ্যে চোখে

সেতুপ্রসঙ্গ

দক্ষিণ গোলার্ধের শরৎ-সূচনায় সেতুটি পঞ্চসপ্ততি বৎসরে পদার্পণ করিল। অস্ট্রেলিয়ার নামোল্লেখেই যেমন ক্যাঙ্গারু, কোয়ালা এবং ক্রিকেট ভাবনায় ভাসিয়া উঠে, তেমনই সিডনি শ্রবণে মনশ্চক্ষে উদিত হয় অপেরা হাউজ এবং হারবার ব্রিজ। এই সেতুটিরই পঁচাত্তর পূর্ণ হইল সম্প্রতি। বিশাল সে সেতু। সম্ভবত পৃথিবীর প্রশস্ততম; অথচ ফেব্রুয়ারি-অন্তে এক সন্ধ্যায়, সেতুটিতে যান চলাচল বস্তুত রুদ্ধ হইয়া পড়িয়াছিল। নীলবর্ণ বাসগুলি বিবিধ বর্ণের ও আকৃতির মোটর গাড়ি সকল, মোবাইক, সাইকেল প্রভৃতি সকল প্রকার যানবাহনের গতি স্তব্ধ হয় সেইদিন। হেতু বিবৃত করি এইক্ষণে। দুখানি বিশালাকৃতি প্রমোদতরণী সেইদিন সিডনি বন্ধরে নোঙর করিয়াছিল -- কুইন মেরি এবং কুইন এলিজাবেথ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে এই প্রথম দুই সুবিপুল বিলাসবহিত্র একত্রে সিডনি আসিল। অতএব জনতা হুজুগে মাতিলেন। প্রভাতে কুইন মেরি যখন বন্দরে আসিতেছিল, নবোদিত সূর্যদেব বহিত্রের বিশাল ছায়াটিকে বন্দরের নিকটস্থ সুউচ্চ হর্ম্যরাজিতে স্থাপন করিলেন। অত:পর পাজামা পরিহিত সদ্য নিদ্রোত্থিত জনতা হর্ম্যের উচ্চতমতলে আরোহণপূর্বক রাজকীয় দৃশ্যটি প্রত্যক্ষ করিয়া যৎপরনাস্তি আনন্দিত হইয়া প্রাত:রাশ ভুলিল

নেমসেক

বছর তিনেক আগে আমার হাতে নেমসেকের যে কপি এসেছিল তার হাল্কা রঙের মলাটে আড়াআড়ি একটি বৃক্ষশাখা ছিল। বাসাবদলের কালে বইটি হারাই। এখানে বেশ কিছুদিন হল নেমসেক রিলিজ করেছে -- টিকিট কাটার আগে আবার পড়ে নিতে গিয়ে দেখি মলাটের কেন্দ্রে আলম্ব চৌখুপিতে ইরফানের কাঁধে টাবুর নত ললাট। পাশের খোপে বিহ্বল কাল পেন। বাঁদিকের কোণে তাজমহল। সিনেমার বিভিন্ন স্টিলের কোলাজ আর কি। চৌকোনা। লালে-হলদে আর নীলে। গ্লসি। মলাট বদলে গিয়েছে। বেমালুম। চ্যাটসউডের একটি মাল্টিপ্লেক্সে ম্যাটিনি শো-তে আমি ছাড়া ভারতীয় আর জনা দুই, দুটি চিনা তরুণী, বাকিরা শ্বেতাঙ্গ। ছবি শুরুর আগে হলের আলো আঁধারিতে চোখ সইয়ে বই-এর পাতা উল্টে যেতে থাকি। আমার ঠিক পরের সারির একাকী প্রৌঢ়া আলাপ জুড়লেন -- কি বই -- ঝুম্পা -- পুলিৎজার -- ইন্টারপ্রেটার অফ ম্যালাডিজ -- কলকাতা -- আমার শহর -- কতদিন দেশছাড়া -- অস্ট্রেলিয়ায় কদ্দিন? আলো নিভে গিয়ে ছবি শুরু হয়ে গেল। তুলির টানে বাংলা হরফে পর্দায় লেখা হতে থাকে নেমসেক, নেমসেক। দর্শকদের কথা ভেবে সামান্য অস্বস্তি হয় আমার। অস্বস্তি হয় ইরফানের প্রথম আবির্ভাবেও ঈষৎ ফোলা চোখের কোল, বাংলা উচ্চারণে কেমন একটা টান! অস্বস্তি বেড়ে

ভোরের ডায়েরি

"যাচ্ছ কোথায়? কদ্দুর?' ভোর ভোর বেরবে সে। খুব ভোরে। শেষ রাতেই হবে হয়তো। অন্ধকার। বাতাসে হিমভাব থাকবে তখন। পথ থাকবে জনহীন, তার জুতোর শব্দে ডানা ঝাপটাবে পাখি, একটা পসাম ঝাঁপ দেবে বটলব্রাশের ডাল থেকে, আকাশে থাকবে চাঁদ, তারাগুলি, কখনও মেঘ। গৃহস্থের একটি দুটি জানলায় আলো থাকবে হয়তো; গ্রসারি স্টোরটির বন্ধ দরজার সামনে রাখা থাকবে দ্য অস্ট্রেলিয়ান, সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের বান্ডিল; ছোট স্টেশনটিতে আলো জ্বলবে -- টিকিট ঘরটি বন্ধ থাকবে যদিও। সে এসে দাঁড়াবে নির্জন প্ল্যাটফর্মে আর ভেন্ডিং মেশিনের গোঁ গোঁ শব্দ হবে শুধু। একা হওয়া যাবে না তবু। ক্যামেরার চোখ নজর রাখবে তার ওপর, প্ল্যাটফর্মে নির্দিষ্ট বাটন টিপে ফায়ার ব্রিগেড বা পুলিশের সাহায্য চাইতে পারবে। একলাটি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দু'হাতের পাতা ঘষবে সে, মোবাইলের ঠান্ডা ধাতব শরীরে হাত দেবে দু'একবার। চেনা কোনও ফুলের গন্ধ আসবে নাকে, নামটা মনে পড়বে না। তারপর একসময় হেলতে দুলতে ফার্স্ট ট্রেনটি এসে দাঁড়াবে -- প্রথম কামরায় বেগুনি জ্যাকেট আর কোঁকড়া চুল ঘুমোবে বসে, বাদামি লেদার জ্যাকেট, বেসবল ক্যাপ ঝিমোবে। রোজ। দ্বিতীয় কামরায় উঠে চারটি স্টেপ টপকে দোতলা

সাগর থেকে ফেরা

"কি যেন কি যেন ঠিক মন দিয়ে জানতে না জানতে, স্টীমার পৌঁছে যায় আজ-কাল-পরশুর প্রান্তে।' ১ সমুদ্র কি আর টানে না তেমন? আজকাল? নীলচে সবুজ, সবজেটে নীল ঢেউগুলি। গাঙচিল, জল ছুঁয়ে উড়ে যাওয়া পাখির ঝাঁক। সিন্ধুসারস। বালি আর কাঁকড়া। শুকনো গুল্ম, ভাঙা ঝিনুক। সানসেট, সানরাইজ, রৌদ্রস্নানে আদুল গাত্র নরনারী। ব্যালকনিতে গোল ছোট টেবিল, অ্যাশট্রে আর ভেজা তোয়ালে। বালিমাখা হাওয়াই চটি। আকাশ মেঘহীন। পাবে আর ফিস অ্যান্ড চিপসে উপচানো ভিড়। হলদে চাঁদ। সিডনির ঘরে বাইরে মেঘলা আকাশ। বৃষ্টি। রোদ্দুর চাই। রোদ্দুর। সমুদ্রকেই মনে পড়ে তখন। ২ "খুঁজে দেখো, আছে, আছে, নির্জনে কি কোনও জনতায় ...' কুইন্সল্যান্ডের গোল্ডকোস্ট। হোটেল, মোটেল আর হলিডে অ্যাপার্টমেন্ট -- নো ভেকেন্সি। স্কুল হলিডেতে ভিড় আর ভিড়। প্রায় ষাট কিলোমিটার তটরেখা বরাবর সারফার্স প্যারাডাইস, ব্রডবিচ, পামবিচ, মারমেইডস বিচ ইত্যাদি নির্জন সৈকতসকল। অথচ ভিড় উপচে পড়ে মুভি ওয়ার্ল্ডে, ওয়েট অ্যান্ড ওয়াইল্ড, সি ওয়ার্ল্ডে কিংবা ওয়ন্ডার ওয়ার্ল্ডে। মুভি ওয়ার্ল্ডে ঘুরে বেড়ায় ব্যাটম্যান, বাগসবানি, টুইটি, স্কুবি ডি। অস্টিন পাওয়ার। ক্যাট উওম্যান।

বসন্তের উত্তর

শীতের শুরুটা এরকমই। শিরশিরে হাওয়া। পাতা ঝরতে থাকে। শুকনো মরা পাতা। বাদামি, হলদে। হাওয়ায় পাকসাট খায়, তারপর মাটি ছোঁয়। কম্যুনিটি নোটিসবোর্ডে গাঁথা কাগজগুলি হাওয়ায় ওড়ে। লম্বাটে, চৌকোনা, আয়তাকার, লাল, গোলাপি, সবুজ কাগজ। আয়তাকার কাগজখানিতে চোখ যায়। তিব্বতী শ্রমণদের অনুষ্ঠান ঞ্ছমন্ডলাঞ্চ -- নর্থ সিডনি কাউন্সিলের একটি সভাগৃহে। পাঁচদিনের অনুষ্ঠানের প্রথম দিনই উপস্থিত হই। যেতে বেলা হয়ে যায়। ততক্ষণে শুরু হয়ে গিয়েছে "মন্ডলা' নির্মাণ। সুবিশাল সভাগৃহের মাঝখানে বর্গাকার বিশাল একটি নকশার হালকা আভাস, তিনজন ভিক্ষু আসনপিঁড়ি, পাশে পিতলের বেশ কয়েকটি শঙ্কু রাখা, ভিন্ন রঙের সূক্ষ্ম মসৃণ প্রস্তরচূর্ণ ভরা শঙ্কুগুলি ... তিব্বতী বজ্রযান বৌদ্ধধর্ম অনুযায়ী "মন্ডলা' স্বপ্নসম্ভব, অলীক আদর্শ জগৎ সকল জীবের ঠাঁই সেথায় এবং ধ্যানে কেবল ধ্যানেই উপলব্ধি করা যায় "মন্ডলা'। প্রাচিন পুঁথিপত্র মেনে অতি যত্নে তৈরি হয় "মন্ডলা'। দেখলাম, শ্রমণত্রয় আসনপিঁড়ি অবস্থায় সামনে ঝুঁকে ছোট ধাতবদন্ড দিয়ে শঙ্কুর সম্মুখভাগ ঈষৎ ঘর্ষণ করছে, সেই মৃদু ঘর্ষণে সূক্ষ্ম প্রস্তরচূর্ণ ভরে দিচ্ছে নকশার ছোট ছোট অংশগুলি

এই সময়

এই সময় এখন সময় বড় অন্যরকম। এখন সময় উদ্বেগের, সময় বিষাদের। কোথায়ও বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন শিশুশরীর, কখনও রক্তে ভাসে স্টেশনচত্বর, শপিং মল, ভিড়ে ঠাসা স্টেডিয়াম, অথবা অ্যাম্বুশের মাঝখানে পড়ে যায় সাধারণ যাত্রীবাহী বাস-বুলেট গেঁথে যায় নিরীহ শিক্ষিকাকে, সন্ধ্যাবেলা ঘরে ফেরে না গৃহস্থ-স্রেফ লশ হয়ে যায়, নরদেহের টুকরোয়, রক্তে মাখামাখি পড়ে থাকে আমাদের চটি, জুতো, পুতুল, টিফিন কৌটো কিংবা বাজারের ব্যাগ। সময় বড় অন্যরকম। সময় বড় ভয়ের, সময় বড় অস্বস্তির। তুতোভাই, সিমকার্ড আর ওয়ান ওয়ে টিকেটে সন্তাসবাদীর সংজ্ঞা নিরুপণ। বুক বাজিয়ে ধর্মযুদ্ধে যায় মহাশক্তিধর, ধর্মগ্রন্থের ভুল ব্যাখ্যায়, অসম্পূর্ণ উদ্ধৃতিতে ফতোয়া জারি হয়ে যায় হুটহাট, ত্রিশূলের উঁকিঝুঁকি এদিক-ওদিক। সুশিক্ষিত মানুষের নখ দাঁত দেখা যায় ঘরোয়া আসরে। এ বড় ভয়ঙ্কর সময়। এসময় অন্যরকম। এ বড় বিস্মৃতির সময়। সকালের হেডলাইন বিকেলে মনে পড়ে না, আজকের কথা কাল ভুলে যাব, কালকের কথা পরশু। যদিও তাঁর অনুবাদ লাখে লাখে বিকোয়, এই অদ্ভুত সময়ে আটশো বছর আগের মানুষটিকে ভুলে যাওয়াই স্বাভাবিক। মনে করায় ইউনেস্কো -- দু'হাজার সাতকে রুমির বছর ঘোষণা করে, সেই সূত্রেই এই শহরেও

দৃশ্যাবলী

  "বরং রেখা, সমূহে একা.....' সাদা পাতারা আক্রান্ত নয় বহুদিন। শব্দে শব্দে বিয়া হয় নাই। এই ব্যস্ততা, এই ক্লান্তি, এই দিনযাপন। মনিটরে ধুলোর সর। কী-বোর্ডেও। অক্ষরের পাশে অক্ষর বসে না, শব্দের পরে শব্দ আসে না। কী-বোর্ড হাৎড়ে বেড়াই। লেখার বসত খুঁজি এদিক সেদিক..... খাঁড়ির জল আর সামান্য জঙ্গল ঘিরে বিকেলের হাঁটা। স্বাস্থ্যচর্চায় ব্যস্ত মানুষের জগিং। শুভেচ্ছা বিনিময়, হাত নাড়া। জ্যাকারান্ডাগুচ্ছে আকাশের বেগুনি হয়ে থাকা। একা একা জলের মুখোমুখি দাঁড়ানো। সেই সব বোটগুলি। পরিত্যক্ত জেটি। ইউক্যালিপটাসের এলোমেলো হাওয়ায় সূর্য ডোবা, স্কাই লাইনে হারবার ব্রিজ। আলো জ্বলে ওঠে শহরের সৌধে, আকাশে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে একলা ক্রেনটি। জল-মাটি-মানুষের এই আয়োজন। আমার লেখা বসত করে কোনখানে? দৃশ্য এক আমার প্রতিদিনের পথটি। সেই ইন্টারসিটি। সেই সব সবজেটে সিট। সেই পুরোনো কালচে কার্পেট। জানলার বাইরে সেই যে নদীটি, সেই জল, জঙ্গল, উপত্যকা এবং ঘোড়াগুলি। কামরার আলো ঘিরে বসন্তের পতঙ্গসমূহ। সহযাত্রীরা কেউ ঘুমে, কেউ বই মুখে, কেউ গান কানে, জানলার বাইরে তাকিয়ে কেউ। সহযাত্রী মহিলাটি আচমকাই বের করেন কুরুশে বোনা একখানি ছ

অকালবোধন

দেখা হওয়ার সময় হয় নি এখন। কথা ছিল না কোনই। তবু দেখা হ'ল। হঠাৎ। এই সময়। যখন নীলকন্ঠ পাখিটি ওড়ে নি-শিউলি ফোটে নি-কাশের গোছা দুলছে না কোত্থাও-পদ্মটি নাই- পদ্মটি নাই ... অস্ট্রেলিয়ান সামার তুঙ্গে,পারা ছুঁয়ে যাচ্ছে চল্লিশ প্রায়-বুশফায়ারে ঝলসাচ্ছে ভিক্টোরিয়া-ঘাম জবজবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ... অথচ তিনি এলেন।সিডনিতে।শুধুই সিডনিতে। প্রস্তুতি ছিল। পরিকল্পনামাফিক। দু'হাজার ছয়ের অক্টোবরের মাঝামাঝি শুরু হয়েছিল প্রদর্শনী-'গডেস-ডিভাইন এনার্জি'। নিউ সাউথ ওয়েলস আর্ট গ্যালারিতে।ভারত, তিব্বত আর নেপালের শ' দেড়েক ছবি আর ভাস্কর্য্য। কোনটি বৃটিশ মিউজিয়ম, কোনটি সানফ্রানসিস্কো,কোনটি বা ভারতের সংগ্রহশালা থেকে এসেছে এই প্রদর্শনীতে। দশটি কক্ষে সাজানো ছবি আর ভাস্কর্য্য-ভিন্ন শিরোনামে-'আর্লি গডেস', 'রাধা', 'দেবী', কালী', 'পার্বতী', 'তারা','কালী', 'তন্ত্র', 'বুদ্ধিস্ট গডেস' এবং 'বজ্রযান'। প্রদর্শনীর পাশাপাশি, নাচের আসর-ওড়িশি, ভরতনাট্যম। সেমিনার, ওয়ার্কশপ।আর সিনেমা।থীম-'গডেস'। এই থীমসরণি বেয়েই তাঁর আবির্ভাবের

"গভীর নির্জন পথে' ও কিছু কথা

লিখছেন ইন্দ্রাণী, কল্লোল, রঙ্গন ও দীপ্তেন  ইন্দ্রাণী: জনপ্রিয় পাক্ষিকের ধারাবাহিক উপন্যাসে বাউল সাধনত্তেÄর বিশদ কিছু বিবরণে বিব্রত , বিরক্ত পাঠককুল। মাঝপথে উপন্যাস পাঠ বন্ধ করেছেন অনেকেই। শুনতে পাই। নিজে যখন পড়ি, একটি ক্ষীণতনু পুস্তকের কথা মনে আসে। অনেকদিন আগে পড়া। একযুগ? তা' হবে হয়তো। খুঁজে বার করে আনি বইটি। জখম শিরদাঁড়া, পাতাগুলি ঈষত্ হলদে। 'গভীর নির্জন পথে'। লেখক সুধীর চক্রবর্তী। প্রথম সংস্করণ ১৯৮৯। প্রকাশক -আনন্দ। সে'সময় চল্লিশ টাকা দাম ছিল বইখানির। সর্বমোট ছয়টি লেখা বইটিতে। লেখাগুলি প্রথম প্রকাশ পায় 'এক্ষণ'এর শারদ সংখ্যায় এব 'ংবারোমাসে'। গ্রন্থরূপ দেওয়ার সময় ছটি অংশ নতুন করে বিন্যস্ত হয়েছে -'সব মিলিয়ে আসলে একটি লেখা, একই অভিপ্রায়কে ধরতে চাওয়া' -'আত্মপক্ষে' সুধীর চক্রবর্তী জানাচ্ছেন। আরো বললেন, ' ।।। অমীমাংসিত থেকে গেল লেখাগুলির জাত বিচারের সমস্যা। কেউ ভাবতে পারেন এগুলি কাহিনীমূলক, অন্য কেউ ভাবতে পারেন অন্য কিছু। এক্ষণ -সম্পাদক লেখাগুলি পত্রস্থ করেছিলেন প্রবন্ধ বলে। তাঁর নিশ্চয়ই মনে হয়েছিল প্রবন্ধের এও একটা ধরণ। তা

রণক্ষেত্রের বাইরে অথবা ভিতরে

      'দ্য মোস্ট ভায়োলেন্ট প্লেস অন আর্থ আউটসাইড আ কমব্যাট জোন'-অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের পাম আইল্যান্ড।১৯৯৯-এর গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী। এখানে অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম আদিবাসী গোষ্ঠীর বাস।জনসংখ্যা সাড়ে তিনহাজার চারহাজারের মত।শতকরা পঁচানব্বই শতাংশ কর্মহীন।গড়ে পনেরজন মানুষ পিছু বসত একখানি-মাথার ওপর ছাদটুকুও এতটাই অপ্রতুল।মারাত্মক সব অপরাধ ঘটে চলে প্রতিনিয়ত।বেশিরভাগই মদ্যপানজনিত অপরাধ।পাম আইল্যান্ডের ইতিহাস বিশ্লেষণ ক'রে অপরাধবিদরা এর রুগম্ভীর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন; এক কথায়, 'ডেসট্রাকশান অ্যান্ড ডিজর্গানাইজেশন অফ ট্র্যাডিশনাল সোসাইটি দ্যাট অ্যাকম্পানিড হোয়াইট সেটলমেন্ট অ্যান্ড কনকোয়েস্ট।' একজন বহিরাগত যেভাবে জানে, যতটুকু জানতে পারে সেভাবেই জেনেছি পাম আইল্যান্ডের গোড়ার কথা। এই দ্বীপের নামটি ক্যাপ্টেন কুকের দেওয়া; সেই সময় ওখানে থাকতেন শ দুয়েক আদিবাসী - মনবরা গোষ্ঠীর।কাছাকাছির মধ্যে ছিল মিশন বীচের সরকারী আদিবাসী প্রকল্প। একটি সাঙ্ঘাতিক সাইক্লোনের পরে সরকারের তরফ থেকে মিশন বীচের জনগোষ্ঠীকে সরিয়ে আনা হয় পাম আইল্যান্ডে। এরপর থেকে পাম আইল্যান্ড মোট

জন এলিয়টের ইচ্ছামৃত্যু

       ১ ইউথ্যানেজিয়া অস্ট্রেলিয়ায় বৈনী। সুইসাইড তা' নয়। আবার, অ্যাসিস্টেড সুইসাইড নিষিদ্ধ এখানে। যদি আপনি অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা হ'ন আর রোগযন্ত্রণা আপনার বেঁচে থাকার সমস্ত ইচ্ছে শেষ করে দেয়, ইউথ্যানেজিয়ার জন্য আপনাকে যেতে হবে সুইজারল্যান্ড।নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, আর ইউ এস-এর ওরেগনে ইউথ্যানেজিয়া আইনী তবে শুধু সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য।সুইজারল্যান্ডের গল্পটা অন্য।ইউথ্যানেজিয়া নিষিদ্ধ সুইজারল্যান্ডেও। কিন্তু আত্মহননে নি:স্বার্থ সহায়তা নিষিদ্ধ নয়। এখানে আছে পঁচিশ বছরের পুরোনো সংস্থা একজিট-শুধুমাত্র সুইসদের জন্য। বছর আট আগে একজিট থেকে বেরিয়ে লুডউইগ মিনেলি শুরু করেন ডিগনিটাস-ইচ্ছামৃত্যুতে আগ্রহী বিদেশীও সেখানে স্বাগত। ২ জানুয়ারির শেষ,দু'হাজার সাত। সিডনি থেকে জুরিখে এসে পৌঁছলেন ডক্টর জন এলিয়ট আর স্ত্রী এঞ্জেলিকা। তাঁদের সঙ্গে এলেন ডক্টর ফিলিপ নিত্শে আর ফিওনা স্টুয়ার্ট। ডক্টর এলিয়ট বৃদ্ধ, দৃশ্যত: অসুস্থ, হুইল চেয়ারে বসে আছেন; এঞ্জেলিকার হাতটি তাঁর হাতে সবসময়। আসুন, আলাপ করি সবার সঙ্গে।পরে হয়ত আর সময় হবে না- ডক্টর জন এলিয়ট- বয়স আশির কাছে। পেশায় ডাক্তার। বছ

চারশো সাতান্ন

  যদিও এখন শহরে এসে গেছেন জর্জ বুশ, কন্ডোলিজা রাইস কিম্বা হু জিনতাও, শিগ্গিরি এসে পড়বেন শিনজো আবে, স্টিফেন হারপার প্রমুখরা, যদিও এই মুহূর্তে সমস্ত অস্ট্রেলিয়া সিডনির দিকে তাকিয়ে, যদিও এই মুহূর্তে শুরু হ'তে চলেছে এশিয়া প্যাসিফিক ইকনমিক কো-অপরেশন ফোরামের সামিট, যদিও এখন মিডিয়া জুড়ে শুধুই নিরাপত্তার বিবরণ আর নেতাদের মুখ, ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিয়ে যাচ্ছে হলদে কেকের রাস্তা এব ১২৩;ং আমরা যাব শহর থেকে দূরে, সঙ্গে থাকবে সম্পূর্ণ অন্য সংখ্যাত্রয় -৪৫৭। ব্রিসবেন থেকে প্রায় ঘন্টা সাতেক পশ্চিমদিকে গাড়ী চালালে সাইপ্রেস পাইনের জঙ্গল। সেখানে আরো কয়েকজনের সঙ্গে অন্য দিনের মত পাইনে করাত চালাচ্ছিলেন গুয়াও জিয়ান দ,ং বছর তেত্রিশের মঙ্গোলিয়ান। দুপুরে খাওয়ার পরে অনেকক্ষণ গুয়াও-র করাত চলার আওয়াজ না পেয়ে তাঁকে খুঁজতে যান বাকিরা। গুয়াও তখন শুয়ে আছেন মাটিতে মুখ গুঁজে , তাঁর ওপর একটি মৃত পাইনবৃক্ষ। সঙ্গীরা অ্যাম্বুলেন্স ডেকে প্রায় একশো কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে তাঁকে নিয়ে গেলেন হাসপাতালে-ততক্ষনে গুয়াও আর নেই। তাঁর স্ত্রী আর সদ্যজাত মেয়েটি সেই মুহূর্তে রাশিয়া চীনের বর্ডারে , মঙ্গোলিয়ার প্রত্যন্ত কোনো

কালবেলা

মেয়েদুটি পাশাপাশি দাঁড়িয়ে।ব্যাকগ্রাউন্ডে বালি, সমুদ্র। খোলা চুল, স্কার্ট,টপ। বছর বারো বয়স হবে হয়তো। কিম্বা তারও কম।অথচ তাদের চোখ, ঠোঁট, সামান্য তেরছা করে ঈষত্ এগিয়ে রাখা বাঁ পা নিশ্চিত মনে করাবে কোন তরুণীকে।অন্তত: এই মুহূর্তে অনেককেই সেরকমই মনে করাচ্ছে । তাঁদের একজন এমা রাশ, অস্ট্রেলিয়ান ফেমিনিস্ট, অ্যাকাডেমিক।গত অক্টোবরে এখানকার বামঘেঁষা "থিঙ্ক ট্যাঙ্ক' দ্য অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট থেকে এমা প্রকাশ করেছেন একটি অ্যাকাডেমিক পেপার,যার শিরোনামটি-ই প্রবল বিতর্কিত-করপোরেট পিডোফিলিয়া। পেপারটির সঙ্গে আছে একটি অ্যাটাচমেন্ট ভর্তি বিভিন্ন ছবি -- ডেভিড জোন্স, মায়ারের ক্যটালগ কিম্বা বার্বি ম্যাগাজিন থেকে নেওয়া বাচ্চাদের ছবি সব। সমুদ্রতীরের ঐ ছবিটির মত। আরোপিত যৌবনের ছবিগুলি। এমা রাশ লিখছেন, " Pictures of sexy children send messages to pedophiles that children are sexually available and interested in sex.That is very irresponsible on behalf of the advertisers and marketers....When family department stores show no conscience on these issues, or are inured to the effects

না-মেয়েলি কথা

নাতাশা স্টট, সেনেটর, ডেমোক্র্যাট; ক্যারল ব্রাউন, সেনেটর, লেবার; জুডিথ ট্রোথ, সেনেটর, লিবারাল; কেরি নেটল, সেনেটর, গ্রীন। অস্ট্রেলিয়ার এই মহিলা সেনেটররা রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্নতাকে সরিয়ে রেখে আপাতত: একজোট দুটি বিলের সমর্থনে। অ্যাবরশন পিল RU 486 এর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য একটি বিল, অন্যটিতে প্রেগনেন্সি কাউন্সেলিংএর বিজ্ঞাপনে সত্যভাষণের দাবী। চারটি মেয়ে, দুটি বিল-বিষয় অ্যাবর্শন। নিছক মেয়েলি প্রসঙ্গ? আসুন, দেখা যাক। অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্ট লাইব্রেরির ইন্টারনেটলভ্য কাগজপত্র ঘেঁটে জানা যাচ্ছে - RU 486 এর পোশাকী নাম Mifepristone । এক ধরনের স্টেরয়েড। ব্যবহতৃ হয় মেডিক্যাল অ্যাবর্শনের জন্য। সার্জিকাল টারমিনেশনের বিকল্প। প্রোজেস্টেরনের কাজ বন্ধ করে দেয় এই ওষুধ, ফলে জরায়ু নিষিক্ত ডিম্বাণু ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়। গর্ভাবস্থার প্রথম ন'সপ্তাহের মধ্যে এই ড্রাগ ব্যবহার করা যায়। ডাক্তার RU 486 এর ডোজ বলে দেবেন, ওষুধ নেওয়ার দুদিন পরে সংশ্লিষ্ট মহিলাকে আবার আসতে হবে ডাক্তারের কাছে, ডাক্তার প্রস্টাগ্ল্যান্ডিন দেবেন, তারপর বাকিটা "মাচ লাইক আ স্পন্টেনিয়াস অ্যাবরশন।' পশ্চি

যদি ভাবো এতো খেলা নয়

        গাল্ফের স্ট্রেইট অফ হরমুজ। ক্ষীণস্রোত জলপথ। তেলবোঝাই জাহাজগুলির নিত্য যাওয়া আসা। এই পথেই। এইখানে একটি তেলবাহী আমেরিকান ট্যাংকার ডুবে যাচ্ছে। দুটি বিস্ফোরণে। অগম হয়ে যাচ্ছে স্ট্রেইট অফ হরমুজ। এ'সব আমরাই করতে পারি। এই আমি, আপনি, বন্ধুরা মিলে। স্রেফ খেলাচ্ছলে।ভিডিও গেমসে। আহ্মদ রেজা নুরি ইরানের একজন কমপিউটার গেম ডিজাইনার। একটি আমেরিকান অন লাইন গেম 'কাউন্টার স্ট্রাইকের' ইরান সংস্করণ এই হরমুজ প্রণালীতে নৌকাডুবি। গোটা খেলাটা নুরিরই মস্তিষ্কপ্রসূত। আসলে, গতবছর কুমা রিয়ালিটি গেমস বের করে থিডি ভিডিও গেমস - "ইউ এস অ্যাটাকস্ ইরান' , "অ্যাসল্টস অন ইরান।' ইরানের ওপর অ্যামেরিকার কল্পিত আক্রমণের সিমুলেশন। মিলিটারি একসপার্টদের চিন্তাভাবনা আর কিছু ডিক্লাসিফায়েড নথিপত্রের ওপর ভিত্তি করে এই জনপ্রিয় খেলাগুলি তৈরী। কুমা-র বেশ নাম ডাক এই ক্ষেত্রে। বেশ ক'বছর ধরে এরা রিয়াল-ওয়ার্ল্ড মিলিটারি ইভেন্টগুলি পুনর্নির্মাণ করছেন -কখনও তা "অপারেশন আনাকোন্ডা' কখনও "ব্যাটেল অফ ফালুজা' বা 'ইরান হস্টেজ রেস্ক্যু মিশন'।।।। অ্যাদ্দিন

খুঁটে খাওয়ার গ্রাফিতি

১ জলপাত্রটি কানায় কানায় ভরা।তলায় নীল নুড়ি।লালচে বেগুণী পাখনায় জল কাটে, ঘাই দেয়। নুড়ি ছুঁয়ে উঠে আসে।জলপাত্রের কাঁচদেওয়ালে বিম্বিত হয় সে।সিয়ামিজ ফাইটার। লড়ে যায় নিজের প্রতিবিম্বের সঙ্গে।এক দানা, দু'দানা, তিনদানা খাবার-দিনে তিনবার। জল পাল্টানো সপ্তাহে একদিন। পুরোনো টেবিল। দাগধরা।টেবিল ঘিরে চেয়ার।চার, পাঁচ,ছয়।কিম্বা তার বেশি।মর্নিং টী, লাঞ্চ, আফটারনুন টী। ওরা চা খায়।কফি। সূপ, কাপ নুডলস,স্যান্ডউইচ।টেবিল ঘিরে ওরা ক'জন। প্রতিদিন। ২ এ এক অদ্ভূত জগত্। আই ডু নট বিলং হিয়ার। ফ্রী ওয়ে ধরে আধ ঘন্টা।তারপর একজিট।কালচে ইঁটের ছোটো ছোটো বাড়ী, দোকান। ধূ ধূ মাঠময় চোরকাঁটা শুধু। বন্ধ ক্যাফে।দেয়াল জুড়ে স্পে পেন্টিংএর আঁকিবুঁকি।।রেলপথের দুধারে পরিত্যক্ত ওয়ারহাউজ।পুরোনো গ্যাস স্টেশনের পাশ দিয়ে তিন মিনিট। অ্যাক্সেস কার্ড ঢোকালে একপাশে সরতে থাকে ভারি গেট। সঙ্গে ধুলো,শুকনো ইউক্যালিপটাস পাতা ,খড়কুটো।কার্ড পাঞ্চিং মেশিন- কবেকার।একটা ঘড়ির সঙ্গে। দুটো কাঁটার একটাও নেই। পুরোনো কার্পেট। ধুলোর গন্ধ। সরু সিঁড়ি। আমার দিন শুরু হয়। এইভাবেই ওদেরও দিন শুরু।রোজ। সপ্তাহে পাঁচদিন। কখনও ছয়। যখ