Posts

Showing posts from April, 2006

জল-মাটি-মানুষ

বসতখানি জনপদে। আকাশ ছুঁয়ে যায় সে¾ট্রাল পয়েন্ট টাওয়ার। দীর্ঘকায় ইমারত, হারবার ব্রিজে সাজানো আমার স্কাই লাইন। ঝকঝকে পথঘাট, সাইডওয়াক। সবুজ ছাতার তলায় কফি খাওয়া চলে। সিটি রেল ব্রিজ পেরোয় -- খাঁড়িতে শান্ত জল, একঝাঁক বোট। শপিং মলে ম্যানিকুইনগুলি। ছুটির দিনে টরঙ্গা জু, ডার্লিং হারবার, মোনোরেল। গ্রীষ্মসন্ধ্যায় খোলা ঘাসজমিতে জ্যাজ ফেস্টিভ্যাল। হাইড পার্কের ফোয়ারা। ব্যস্ত মানুষজন। সুদেহী, ঝাঁ চকচকে। চেনা মানুষ। চেনা শহর। চেনা আখ্যান। অলস দুপুরটি কাটাই লাইব্রেরিতে। বই। সিনেমার ডিভিডি। পুরোনো বইটি হাতে ঠেকে চিল্ড্রেন্স সেকশনে। সাদামাটা মলাটে বৃদ্ধ মানুষটি, না কামানো গোঁফ দাড়ি, ইস্ত্রিবিহীন জামা। কনসারটিনা হাতে। মলিন ছবিটির ব্যাকগ্রাউন্ডে ধূসর ল্যান্ডস্কেপ। লম্বা জটিল নামখানি। জন মেরেডিথের ফোক সং অফ অস্ট্রেলিয়া অ্যান্ড দা মেন অ্যান্ড উইমেন হু স্যাং দেম। জন মেরেডিথ, একেবারে প্রথম লাইন থেকেই অনাগরিক সুরটি বেঁধে দেন এইভাবে -- ""I was only nine years old when my father died, but I have very clear memories of him. He was away droving sheep a lot of the time, out along the lower Darling

পরীকথা

পরীর সঙ্গে আমার শেষ দেখা শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ছোট গল্পে। নিত্যদিনের অনলৌকিকতার মাঝে হঠাৎই এসেছিল একটি রাত-পরী দেখা রাত; চিরচেনাজন পরী হয়ে যায় যে ফিনিক ফোটা রাতে। তারপর আর কোনও পরীর কাছাকাছি আসা হয়নি। মাস দুয়েক আগে, হঠাৎই পরীস্থানের খোঁজ পাই। সিডনি শহরের কাছেপিঠেই পরীরা আছেন। চাইলেই হাজির হবেন তাঁরা। জন্মদিনের আসরে। সকালে, দুপুরে কিংবা সন্ধ্যায়। ফুরফুরে টিংকার বেল, পিনোক্কিওর ব্লু ফেয়ারি, সিন্ডারেলার ফেয়ারি গডমাদার, অথবা সাতরঙা রেনবো ফেয়ারি, ছটফটে বাটারফ্লাই ফেয়ারি, দুষ্টু-মিষ্টি টুথ ফেয়ারি। বেশ কয়েকটি অর্গানাইজেশনের সঙ্গে পরীদের দিব্যি জানাশোনা, প্রতিযোগিতাও বেজায় তাদের। এখানকার পরীটি আপনার শিশুটিকে দেবেন ফেয়ারি কৃস্টাল তো ওখানকার পরীটি আনবেন ম্যাজিক নেকলেস। এই পরীটি যদি শিশু অতিথিদের জন্য আনেন পরী আঁকা থালা বাটি, ওই পরীটি আনবেন পরীস্থান স্পেশাল খেলনা পুতুল। আপনি চাইলে, খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও পরীরাই করবেন। আপনি শুধু মেনু পছন্দ করুন। বেছে নিন পছন্দের প্যাকেজটি। তারপর ফোন কিংবা ই-মেইল। আপনার আসর কখন শুরু, কজন নিমন্ত্রিত, তাদের বয়স, কোন পরীটি চাই আপনার, কতক্ষণের জন্য -- সব জানিয়ে দি

আইকম্‌ বাইকম্‌ গপ্পগাড়ি

রোববারের সকালটি ঈষৎ অন্যরকম যেন। যদু মাস্টাররা আজ শ্বশুরবাড়ি যাবেন না। ছেলেপিলের হাত ধরে সোজা এসেছেন সিডনি সে¾ট্রাল স্টেশনে। প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে স্টিমে টানা পুরোনো ইঞ্জিন, সঙ্গে ছোট ছোট আটখানি বগি। সে¾ট্রাল থেকে স্ট্র্যাথফিল্ড, লিডকোম্ব, ব্যাঙ্কসটাউন, সিডেনহ্যামের বৃত্তপথে আবার সে¾ট্রালে ফিরে আসা। বসন্তের বই সপ্তায় চিল্ড্রেন্স বুক কাউন্সিল অফ অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগ এই স্টোরিয়েন্টাল এক্সপ্রেস। গপ্পগাড়ি। প্ল্যাটফর্মে কাউন্সিলের স্টল। যদু মাস্টারের পকেট কিছু খালি হল শুরুতেই। বাচ্চাদের হাতে এল এক ব্যাগ বই, ব্যাজ, পেন্সিল কেস, বেলুন, এটা সেটা। প্ল্যাটফর্মে ঘুরে বেড়ায় বই-এর পাতা থেকে উঠে আসা চরিত্র সব। ব্যাগি গ্রিন ইউনিফর্মে গল্পগাড়ির কর্মীদের হাসিমুখ। উষ্ণ অভ্যর্থনা। অল অ্যাবোর্ড। সিগনাল সবুজ। গপ্পের চাকা নড়ে উঠল। ছোট ছোট পুরোনো বগি। আনাচে কানাচে ভিড় করে আছে গপ্পরা। অবয়বহীন আপাতত। অন্দরসজ্জায় মনে হয় এই বুঝি গোঁফ চুমরে বেরিয়ে এলেন এরকুল পোয়ারো। না, এরকুল নন, কামরায় ঘুরে বেড়ায় উইচ, ডরোথি, অ্যালিস, কাকতাড়ুয়া। অথবা স্টোরিটেলারের ব্যাজ এঁটে স্বেচ্ছা-গল্পবলিয়ে। বাচ্চার ঘিরে ধরেছে তাদের। একধার

স্মারক অথবা --

    ইদানীং পোস্টারে ছয়লাপ পাড়া। ল্যাম্পপোস্টে সাঁটা, উঁচু দেওয়ালে টাঙানো অথবা ফুটপাথে ইষৎ হেলিয়ে দাঁড় করানো চড়া হলুদের ওপর কালো মোটা হরফে লেখা পোস্টার -- সেভ আওয়ার অ্যানজ্যাক হেরিটেজ বা সেভ গ্রেথওয়েট অথবা রাইট লেমা ইমিডিয়েটলি কিংবা স্টপ লেমা সেলিং আওয়ার অ্যানজ্যাক হেরিটেজ ... এইসব। লেমা নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার। লেখার সঙ্গে কোথাও একটি ম্যাপ বা পুরোনো বিশাল বাড়ির ছবি, কোথাও বা একটি অতি প্রাচীন সিপিয়া রঙের গ্রুপ ছবি-সৈনিকের বেশে, নার্সের পোশাকে নারী, পুরুষ-পরিচ্ছদ, কেশবিন্যাস সবই বেশ প্রাচীনকালের অন্তত একশো বছরের পুরোনো তো বটেই। 'শ পুরতে আর সামান্যই বাকি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শুরু। অস্ট্রেলিয়া একটি ফেডের‌্যাল কমনওয়েলথ সেই সময় -- বয়স বছর পনেরো। নিউজিল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার সেনা মিলে তৈরি হল অস্ট্রেলিয়া অ্যান্ড নিউজিল্যান্ড আর্মি কর্পোরেশন বা অ্যানজ্যাক -- মিত্রশক্তির নৌবাহিনীর অবাধ প্রবেশের জন্য অ্যানজ্যাক আক্রমণ করল গ্যালিপলি পেনিনসুলা। উনিশশো পনেরোয়। প্রায় আট হাজার অস্ট্রেলিয়ান সেনা নিহত আর আহতের সংখ্যা অগণন। সেই সময় নর্থ সিডনি অঞ্চলের জনৈক স্যার থমাস ডিবস নিউ সাউথ ওয়েলসক

সন্ন্যাসী দাদু

জীবনের পথ বলতে যা বোঝায় সেই অর্থে এযাবত্ বাবাজীদের সংস্পর্শে আসা হয় নি; জীবনের গোড়াতে আমার সন্ন্যাসী দাদুকে দেখেছিলাম আমাদের বাড়ীতে এক সকালে। তিনি আমার ঠাকুমার দাদা, বাবার বড়মামা।বাবার ছোটোমামা অঙ্ক পাগল ছিলেন শুনেছি, আঁক কষতে কষতে নদীতে স্নান করছিলেন, আর ওঠেন নি।ঠাকুমার তাই গভীর দু:খ ছিল দাদা/ভাইদের ব্যাপার স্যাপারে। আমাদের কোনো আত্মীয় হরিদ্বারে গেলেই , ঠাকুমার কঠোর নির্দেশ মেনে সন্ন্যাসী দাদুর সঙ্গে দেখা করে আসতেন,ঠাকুমার দেওয়া টাকা পৌঁছে দিতেন তাঁরা কলকাতায় ফিরলেই ঠাকুমার অনিবার্য্য প্রশ্ন-'হ্যায় কিছু জিগায়?'অর্থাত্, পূর্বাশ্রমের কথা কিছু তিনি শুধোন কি না। আমি নিজেও একটু বড় হয়ে পোস্টাপিস থেকে এম ও করেছি হরিদ্বারে; প্রতিবারই শুদ্ধ ভাষায় লিখতে হ'ত-আশ্রমের সেবার জন্য এই টাকা পাঠাইলাম, গ্রহণ করিলে বাধিত হইব-বিনীতা ইত্যাদি। আমার বয়স যখন ৪ কি ৫, আমি সন্ন্যাসী দাদুকে দেখি।বেশ মনে আছে, সকাল থেকেই বাড়ীতে সাজ সাজ রব, প্রচুর আত্মীয় স্বজন এলেন, আমাদের স্নান টান করিয়ে দেওয়া হয়েছিল ভোর হতে না হতেই। তারপর তিনি এলেন-আমি সন্ন্যাসী বলতে ততদিন বিবেকানন্দ কেই বুঝতাম-সেইরক

পায়ের তলায় সর্ষে

যখন পায়ের তলায় সর্ষে পড়েছিল অর্থাত্ পা হড়কে গতিজাড্যে চলতে শুরু করেছিলাম , তখন সদ্য বে করেছি।সত্যি কথা বলতে কি, আমার প্রথম বিবাহ বার্ষিকীতেই পায়ের তলায় প্রথম সর্ষে পড়ল। সে সময় কর্মসূত্রে আমরা ভিন্ন প্রদেশবাসী-ঠিক হোলো বিয়ের এক বছর পূর্তিতে আমি যাবো তাঁর শহরে-ছুটির মেয়াদ সাত দিন। ঠিক এক মাস আগে তাঁকে যেতে হ'ল ম্যানিলায়, ফেরার দিন অনিশ্চিত; কোম্পানীর লোকজন আর আত্মীয়স্বজনের সৌজন্যে আমার ভিসা যোগাড় হয়ে গেল-ঐ সাত দিন ম্যানিলায় কাটাবো। আগে যেমন ঠিক ছিল সেইমতো বিকেল বিকেল রাজধানীতে চড়ে বসলাম, পরদিন রাতে ফ্লাইট দিল্লি থেকে; জম্পেশ খেয়ে দেয়ে তো রাতে ঘুম দিয়েছি, যত বারই ঘুম ভাঙে , ট্রেনের নট নড়ন নট চড়ন নট কিচ্ছু ... সকালে শুনি বিশাল লেট-কোথায় কোন মালগাড়ী উল্টে পড়েছিল সেজন্যই এই হাল-যত বেলা বাড়ে, গাড়ী তত লেট হয় আর আমার টেন্শন তত বাড়ে -খাবার দাবার, বাথরুমের জল একে একে ফুরিয়ে সন্ধ্যে ৭টায় দিল্লি স্টেশনে নামলাম-আমাকে তখন কোম্পানীর কর্তার সঙ্গে দেখা করতে হবে, তিনি যেন কি দেবেন সঙ্গে নিতে, টাকা বদলাতে হবে-রাত সাড়ে ১১টায় ফ্লাইট।নিজের স্নান, খাওয়া, পোষাক বদলানোর কথা সেই মুহূর্তে

যতদূরেই যাই

সে বড় সহজ সময় ছিল না। বাতাসে বারুদের গন্ধ মেলায় নি তখনও। বাংলাদেশ সদ্যোজাত। বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ প্রস্তর-মস্তক হারাচ্ছেন ক্ষণে ক্ষণে, নতুন করে পাওয়ার জন্য নয়। আমাদের উত্তর শহরতলীতে শিশুরাও পরিচিত বোমা, পাইপগানের গঠনে; নিষিদ্ধ শব্দরাজিতে যুক্ত হচ্ছে লাশ,পার্টি, নকশাল এবং চারুবাবু। এমত সময়ে, লাল স্কার্ট, সাদা জামা, লাল রিবনে ভগ্নীদ্বয় শুরু করেছি স্কুলে যাওয়া। রিকশপথ জুড়ে দেখতে থাকি রেললাইনের পাশের বস্তি, বাংলাদেশী উদ্বাস্তু ভিখারিনী, যশোর রোডে বাসে থ্যাঁতলানো কুকুর,অজস্র দেওয়াল লিখন যা নিষিদ্ধধ্বনিমাধুর্যে আমাদের মুখস্ত; কুমোরপাড়ার খড়ের কাঠামো দেবদেবীদের অলৌকিকত্ব সম্বন্ধে আমাদের মোহমুক্ত করে। পাড়া ও পথের যাবতীয় কুশ্রীতা, যতেক অনলৌকিকত্ব আমাদের স্কুলের দেওয়ালে ধাক্কা খায়, প্রবেশের পথ পায় না। প্রাচীন স্কুলবাড়ী, সবুজ লোহার গেট, জামরুল গাছের তলায় ফোল্ডিং চেয়ারে সস্ত্রীক বাহাদুর দ্বাররক্ষী, প্রশস্ত পথে সবুজ স্কুল বাস দাঁড়িয়ে, কোলাপসিবল গেটের সামনে অজয়দা, জয়ন্তদা; মিস মামেন নির্দেশ দিচ্ছেন মালীকে, বাগান ভরে সুবৃহত্ ডালিয়া, গোলাপ। একটু সকাল সকাল পৌঁছলে দেখা যাবেই ভেজা চুল

রিটার্ন টিকিট

১ স্টেশনে যাওয়ার এই একটি-ই রাস্তা।পুজোর মুখে সামান্য নুড়ি আর পিচের প্রলেপ, বছর না ঘুরতেই খানা খন্দগুলি আবার পরিস্ফুট। দুপাশে ছোটো ছোটো দোকান-সারদা মেডিকেল হল, কাকলি স্টেশনারিজ, মা তারা সুইট্‌স। রাস্তা আর দোকানের মধ্যবর্তী অপ্রশস্ত চাতালে সকালে ফুল, মালা, বিকেলে পেয়ারা আর কেরোসিন। জেরক্সের দোকানে কোচিং ফেরত ভীড় সন্ধ্যা নাগাদ। দুপুরবেলা পথটি নিরিবিলি।রূপায়ণ টেলার্সের সেলাই মেশিন আর লালার আটাচাক্কির সামান্য আওয়াজ। সুলেখা এই সময় বেরোন। শিয়ালদার ট্রেন ধরেন সপ্তাহে দুদিন। এই সব দোকানপাট পরিচিত এখন, গলিঘুঁজিও সড়গড়। এক বছরের বেশি-ই হয়ে গেল এই অঞ্চলে।খাস কলকাতায় বছর তিরিশেক চাকরির পরে মফস্বলে তিন কামরার ফ্ল্যাট। একাই থাকেন।স্বামী গত হয়েছেন বহুবছর।আর মেয়ের সংসার মালদায়। কাল রাতে বৃষ্টি হয়েছিল।সাদা শাড়ীটি গোড়ালির ওপর আলগোছে তুলে হাঁটেন সুলেখা।ওভারব্রিজ পেরিয়ে টিকিটঘর। প্ল্যাটফর্মে নামতেই বোঝেন ট্রেনের গোলমাল।শনিবারের দুপুরে প্ল্যাটফর্মে বেশ ভীড়। ঘোষক জানাচ্ছেন, পরবর্তী ডাউন ট্রেন আসতে এখনও ঘন্টা দেড়েক। এতগুলো সিঁড়ির ধাপ পেরিয়ে সুলেখা ঘামছিলেন। ব্যাগ থেকে রুমাল বের করে আলতো মুখ মোছেন। দেড়-দ

The Third Man of the Double Helix-The Autobiography of Maurice Wilkins

যদিও ১৯৬২তে ডি এন এ অণুর গঠন আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরস্কার পেলেন জেমস ওয়াটসন, ফ্রান্সিস ক্রিক আর মরিস উইলকিন্স; সাধারণের কাছে, ক্রিক,ওয়াটসন আর ডাবল হেলিক্স যেমন অঙ্গাঙ্গী ,মরিস একেবারেই তা নন। তার সঙ্গে এক অকালমৃতাও রয়ে যান কাব্যে উপেক্ষিত। পরবর্তীকালে, ওয়াটসন লিখলেন " The Double Helix: A Personal Account of the Discovery of the Structure of DNA " ,ক্রিক লেখেন "What Mad Pursuit" । ওয়াটসনের অকালমৃতা রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনের উদ্দেশ্যে কটুক্তি, বিভিন্ন সময়ে নানাজনের বিবিধ মন্তব্য,'৭৪-এ প্রকাশিত 'Rosalind Franklin and DNA '-সব মিলিয়ে রোজালিন্ড পর্যবসিত হ'ন সত্তরের দশকের ফেমিনিস্ট আইকনে-'সিলভিয়া প্ল্যাথ অফ মলিকিউলার বায়োলজি' আর মরিস উইলকিন্স হয়ে যান অত্যাচারী পুরুষের প্রতিভূ, স্রেফ একজন ভিলেন। ২০০৩-এ, ছিয়াশী বছরের মরিস লিখলেন 'The Third man of the Double Helix: the Autobiography of Moris Wilkins' । প্রকাশক অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস।পেপার ব্যাক আর হার্ড বাউন্ড উভয়েই লভ্য। অবতরণিকায় মরিস লিখেছেন, ' In 1968 Jim Watson wrote a

স্থানীয় সংবাদ

      অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূল বরাবর সটান উত্তরে উঠে টোরেস স্ট্রেইট পার হলেই নিউগিনি, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ।নিউগিনির পূর্বাংশ স্বাধীন দেশ পাপুয়া নিউগিনি, পশ্চিমাংশে ওয়েস্ট ইরিয়ান জয়া এবং পাপুয়া-ইন্দোনেশিয়ার দুই প্রদেশ। ১৮২৮ নাগাদ ইওরোপীয়ানদের চোখ পড়ে দ্বীপটিতে -ফলস্বরূপ, পশ্চিমাংশ যায় ডাচেদের হাতে-নেদারল্যান্ডস নিউগিনি; ১৮৮৩ নাগাদ পূব দক্ষিণ অংশটি হয় বৃটিশ কলোনি আর প্রায় সেই সময়ই উত্তর পূর্ব অংশটি জার্মান অধীনস্থ হয়-জার্মান নিউগিনি। ১৯০৫ নাগাদ বৃটিশ গভর্নমেন্ট তাদের অংশটির দায়িত্ব দেয় অস্ট্রেলিয়াকে; প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় অস্ট্রেলিয়ান ফোর্স দখল করে নেয় জার্মান নিউগিনি; অস্ট্রেলিয়ার দখলে থাকা ভূখন্ডের পরিচিতি হয় টেরিটরি অফ পাপুয়া নিউগিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মাঝামাঝি, জাপান আক্র²মণ করে নেদারল্যান্ডস নিউগিনি আর টেরিটরি অফ পাপুয়া নিউগিনি- সেই সময় অস্ট্রেলিয়ান টেরিটরি মিলিটারি শাসনে চলে যায়; যুদ্ধশেষে, মিলিটারি শাসনের বিলুপ্তিতে অস্ট্রেলিয়ান টেরিটরির নাম বদলাতে থাকে -কখনও পাপুয়া অ্যান্ড নিউগিনি, কখনো পাপুয়া -নিউগিনি। অবশেষে , ১৯৭৫ নাগাদ, অস্ট্রেলিয়া পূর্ণ স্বাধ

হলদে কেকের রাস্তা

   "ফলো দ্য ইয়েলো ব্রিক রোড'-ডরোথি,কাকতাড়ুয়া, টিনের সেপাই, সিংহমশাই সবাই হাঁটছেন ইয়েলো ব্রিক রোড ধরে, এই গানখানি গাইতে গাইতে। পথের শেষে সব পেয়েছির দেশ-সব্বার মন:স্কামনা পূর্ণ হবে অজ দেশের উইজার্ডের জাদুদন্ডের ছোঁয়ায়। গন্তব্যে পৌঁছে অবশ্য মিথগুলি ভেঙে যেতে থাকে।।। বছরকয়েক আগের টাইম পত্রিকায় প্রায় এই লেখার মতই শিরোনাম ছিল একটি আর্টিকেলের।মনে পড়লো।তবু হেডিং বদলাতে ইচ্ছে হ'ল না।আসলে, ইয়েলো কেকের সমস্ত গল্পেই ইয়েলো ব্রিকের গানটাই থিম সঙ। গত এপ্রিলে চাইনিজ প্রিমিয়ার ওয়েন জিয়াবাও আর অস্ট্রেলিয়ার প্রাইম মিনিস্টার জন হাওয়ার্ড একটি চুক্তি সাক্ষর করেছেন;চীনদেশে অস্ট্রেলিয়ার ইউরেনিয়াম বিক্রির পথ সুগম করার লক্ষ্যে।ক্যানবেরায়, দু দেশের সরকারের দীর্ঘ আলোচনা ও বিভিন্ন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা হয়েছে-খবরে প্রকাশ।নিউক্লিয়ার এনার্জির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার ও আদানপ্রদান তার মধ্যে অন্যতম। চীন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে -যে ইউরেনিয়াম তারা কিনবে তা শুধুই এনার্জি উত্পাদনে ব্যবহার হবে, অস্ত্র তৈরীর কাজে নয়।চায়না ন্যাশনাল নিউক্লিয়ার করপোরেশনের জেনেরাল মানেজার কাং রিক্সিন বলেছেন , ২০২০ সাল

কোষাধ্যক্ষ এবং এক অনাম্নী অঙ্গনা

জুন মাসের সকাল। অস্ট্রেলিয়ার রেডিও নোভা ৯৬।৯এর ব্রেকফাস্ট শো। হোস্ট দু'জন। মেরিক আর রস। কথায় কথায় বেলা গড়াচ্ছে। প্রশ্ন তুললেন মেরিক ওয়াটস-প্রস্টিটিউটরা কেন তাঁদের হাই প্রোফাইল ক্লায়েন্টদের নামধাম গোপন রাখেন। সঙ্গে সঙ্গে একটি ফোন কল। "আমি একজন প্রস্টিটিউট। We may have defamation cases brought against us. I mean, as I'm anonymous, I can say I've seen Michael Costa... ' সঙ্গে সঙ্গে লাইন কেটে দিলেন হোস্টদ্বয়। মাইকেল কস্টা নিউ সাউথ ওয়েলসের ট্রেজারার। আধঘন্টার মধ্যেই মেরিক আর রস অ্যাপোলজি চাইলেন এই বলে-" Just before the 8.30 news this morning we spoke to an anonymous sex worker who made reference to Michael Costa.We wish to advise that this reference was made without any foundation and is not in any way condoned or supported by this radio station. We wish to apologise for any hurt suffered by anyone as a result of this unfounded allegation. ' সংবাদ মাধ্যম ছেঁকে ধরে রেডিও নোভার ম্যানেজার শ্রীমতী ম্যান্ডি উইক্সকে। ম্যান্ডি হোস্টদের আড়াল করে সুক

নিছক ব্যক্তিগত, অথবা --

তোমার সঙ্গে আর দেখা হবে না। কথা তো ছিল না এমন। পুজো আসে, পুজো যায়। আমাদের বয়স বাড়ে।বিজয়ার প্রণাম সারি ফোন অথবা ইমেলে। আমাদের জানা থাকে, পরের বিজয়ায় প্রণাম করার লোক আরো কমে যাবে। আমরা প্রস্তুত থাকি। এবারে তৈরী ছিলাম না। আমাদের আর দেখা হবে না।এরকম তো কথা ছিল না। অসম-আগরতলা ন্যাশনাল হাইওয়েতে তোমার বাস মিলিটারি এসকর্ট ভেঙে ওভারটেক করবে -- কথা ছিল না। পথের দু'ধারের পাহাড়ে সিকিউরিটি ফোর্স সেদিন অনুপস্থিত -- কথা ছিল না।একাদশীর সকালে, একটিমাত্র বুলেট এসে বিঁধবে শুধু তোমাকেই, পুজোর শাড়ী পরা, জানলার ধারে বসা শুধু তোমাকেই -- কথা ছিল না। তুমি আমার আপনজন -- তীব্র এবং তীব্রতর ট্রমা আমাকে গ্রাস করে নিমেষে। শোকবার্তায় আমার মেল বক্স ভরে যায়, আই এস ডি আসে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। মৃতের মুখ এক্ষেত্রে আমাদের চেনা। আমরা সবাই বিপর্যস্ত। ট্রমাটাইজড। কাশ্মীরের রাস্তায়, এই বর্ষায় তুমিও ছিলে টুরিস্টবাসের জানলার পাশটিতে। মর্টার এসে পড়বে-কথা ছিল না। আর তুমি ফিরছিলে অফিস থেকে-ভায়ান্দার, বোরিভিলি, যোগেশ্বরী, খার অথবা মাহিম স্টেশন হয়ে। তোমার আর বাড়ী ফেরা হয় নি। কথা ছিল না। অথবা ছিল।যে কার

হেমন্তকথা

     ঈস্টার আর অ্যানজাক ডের ছুটি শেষ। জনগণ কাজে ফিরছেন। বাতাসে মৃদু হিমভাব, আপিসফেরতা হাল্কা জ্যাকেট,এক ঘন্টা দেরীতে সকাল। অস্ট্রেলিয়ায় এখন হেমন্ত, এপ্রিল ফুরিয়ে এল। স্কুলের দু সপ্তার ব্রেক শেষ হ'তে এখনও কদিন বাকি-পাবলিক লাইব্রেরি থেকে 'প্রিমিয়ার রিডিং চ্যালেঞ্জ'এর বই ইস্যু হচ্ছে প্রচুর। সাক্ষরতা বাড়াতে আর বাচ্চাদের বইমুখো করতে অস্ট্রেলিয়ার স্টেট গভর্নমেন্টের এই উদ্যোগের বয়স পাঁচ, বাচ্চাদের বয়স পাঁচ থেকে তেরো-কিন্ডারগার্টেন থেকে ক্লাস এইট। সরকারী হিসেব অনুযায়ী, প্রথম বছর ছত্রিশহাজার স্কুলছাত্র অংশ নিয়েছিল উদ্যোগে, গতবছর দুশোছাব্বিশহাজার।এ'বছর আরো বাড়বে, শুনছি। কিন্ডারগার্টেন থেকে ক্লাস এইট অবধি চারটি গ্রুপ। প্রতি গ্রুপের জন্য আলাদা বইএর লিস্টি। পাবলিক অথবা স্কুল লাইব্রেরি থেকে লিস্টি অনুযায়ী বই নেওয়া যাবে, লগ রাখতে হবে বাবা-মা বা টিচারকে। লিস্টি থেকে বছরে কুড়িটি বই পড়তেই হবে ক্লাস থী থেকে এইটকে। শেষ গ্রুপটির জন্য এই সংখ্যা চল্লিশ আর তাদের বইলি পড়ে শোনানো যেতে পারে। তালিকার কিছু বই হাতে এসেছে- k to 2 ছাপ, কিন্ডারগার্টেন থেকে ক্লাস টুর বাচ্চারা প

কোদনডস্বরূপ

ইউক্যালিপটাস আর গাম ট্রীর আড়ালে মেপলগাছগুলি পাতা ঝরায়।বাদামী ভঙ্গুর পাতা হাওয়ায় পাক খায়। ঈষত্ উঁচুতে উঠে মাটিতে পড়ে।ধুলো হয়।বাসী খবর যেমন। অস্ট্রেলিয়ার পাবলিক স্কুলে স্ক্রিপচার ক্লাস চলছে গত এক শতক।অপশনাল ক্লাস। স্কুলে ভর্তির সময় ফর্মে অভিভাবককে লিখে দিতে হয় ছাত্রটি স্ক্রিপচার ক্লাস অ্যাটেন্ড করবে কি না, কোন্ ধর্মের ক্লাস করবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেই মতো ব্যবস্থা নেন। অল্পবয়সী যে ছাত্ররা স্ক্রিপচার ক্লাসে যায় না , কম বেশি আধঘন্টা সময়টুকু তারা ছবি আঁকে, খেলে, গল্প শোনে। বয়সে বড় ছাত্ররা হয়তো লাইব্রেরিতে কাটায় সেসময়। নিউ সাউথ ওয়েল্সএর ফেডারেশন অফ পেরেন্টস অ্যান্ড সিটিজেন অ্যাসোসিয়েশনের এতে আপত্তি; স্ক্রিপচার ক্লাস না করা ছাত্রদের জন্য এথিক্স ক্লাসের দাবী তুলেছেন তাঁরা। নবীন "নন-স্ক্রিপচার' যারা আধঘন্টা ধর্মকথা না শুনে ছবি আঁকে- সংখ্যায় ক্রমে বাড়ছে। তাই এঁরা চিন্তিত।কে না জানে ধর্মের ক্লাস অ্যাটেন্ড করলেই মূল্যবোধ তৈরী হয়! ফেডারেশনের অ্যাক্টিং প্রেসিডেন্ট ডিয়ান জিবলিন জানাচ্ছেন বহু অভিভাবকই ছেলেপিলেদের জন্য "নিউ সোর্স অফ মরাল টিচি'ং চাইছেন।ডিয়ান আরো বলছেন,

পিঁপড়ে ...

কোন কোন দিন এমন হয়। হয়তো শাওয়ারের তলায়। চোখ বোজা।জল পড়ছে। কেউ যেন ডাকল আমার নাম ধরে। চেনা গলায়।কোন্দিকে কার্টেন, কোথায় টাইলস -হাতড়ে বেড়াই। সাবানের ফেনা ছুঁয়ে থাকে পা।সর্বাঙ্গ ঘিরে অঝোরে জল আর মৃত্যুভয়।বাষ্পে ভরা স্নানঘর। ধোঁয়া ধোঁয়া। অথবা, ডেস্কটপ সেন্টিফিউজ। হিমঠান্ডা। এপেনডর্ফগুলি পাক খায়। মিনিটে পাঁচহাজারবার।তিরিশ সেকেন্ড। ঘূর্ণনশেষে, সুপারনেট্যান্ট চলে যায় সিঙ্কে। এপেনডর্ফের তলদেশে জমে থাকে প্রাণকণিকা। ডি এন এ। সাদাটে। আঠালো। র‌্৯AFাকগুলি ভরে ওঠে এপেনডর্ফে। আমার চারদিকে থিতোনো প্রাণ।আতঙ্কে ছুঁড়ে ফেলি অ্যাপ্রন। কিম্বা ট্র্যাশ ফেলতে যাই। কাঁচের ওপর কাঁচ । শব্দ ওঠে। মিলিয়ে যায়।লম্বা একটা গাছ।নিস্তব্ধ রাত।মরাচাঁদের ওপর ভেসে যায় মেঘ। এই দিনগুলো রোজ আসে না।যখন আসে, থেকে যায়।কুঁকড়ে রাখে। আমি খুঁজে বেড়াই মৃত্যুচিহ্নহীন দিনগুলি রাতগুলি। মৃত্যুসংবাদহীন খবরের কাগজ।মৃত্যুদৃশ্য বিরহিত মুভি। মৃত্যুবর্ণনাহীন উপন্যাস। শবযাড়ী বর্জিত পথসকল। একটা খেলার মতো।হেরে যাওয়া খেলা। রোজ রোজ জিততে চাওয়া।রোজ রোজ হারা। যেমন বাসস্টপে পৌঁছনোর আগেই অবশ্যম্ভাবী চলে যায় বাসটি।একা দাঁড়িয়