Posts

Showing posts from 2021

মুকুলের বাড়ি

  ড্রোন দিয়ে আমাদের পাড়ার ছবি তুললে কেমন দেখাবে এই নিয়ে সেদিনও আমাদের কারোরই কোনো মাথা ব্যথা ছিল না। বস্তুত ড্রোন বিষয়ে বিন্দুমাত্র জ্ঞান এ' পাড়ায় আমাদের কারোর ছিল কী না সন্দেহ । অথচ আজ দু মাস হয়ে গেল, সপ্তাহে একদিন ভোরের  দিকে ড্রোন এসে,  খাবার , ওষুধ,  কিছু প্রয়োজনীয় জিনিষ - বাড়ির দোরগোড়ায় নামিয়ে, আবর্জনার ব্যাগ নিয়ে উড়ে যায়। প্রথম প্রথম ড্রোন দেখা গেলেই গলির কুকুররা ডেকে উঠত - আমরা দরজা খুলে ছোটো বস্তাটা ঢুকিয়ে নিতাম বাড়িতে। ইদানিং কুকুরদের কোনো শেলটারে নিয়ে গেছে খুব সম্ভব; সকালের দিকে চুপচাপ ড্রোন আসে। পিচরাস্তা থেকে বেশ খানিকটা নেমে খানিক ঘাসজমি আর আমাদের সাত নম্বর বাড়ি।সামনে একটা ঝাঁকড়া জামরুল গাছ। রাস্তার নাম আছে - কিন্তু এই মফস্সলে রাস্তার নাম, নম্বর দিয়ে কেউ কাউকে চেনে না - অমুক বাবুর বাড়ি, স্কুলের বড়দিমণির বাড়ি, সাদা বাড়ি, মাঠের পাশের ঐ গোলবাড়ি টা... আমাদের বাড়ির ছাদ তিনকোণা- বিদেশী বাড়ির মত অনেকটা- শীতের দেশের বাড়ি যেমন হয়, একটা চিমনি নেই শুধু  - এই যা; ঠাকুরদার ডিজাইন  করা - নিজের হাতে কাঠের কাজ টাজ ও করতেন শুনেছি। বাবারও এই শখ - কাঠের জিনিসপত্র...

দালির বিষয় আশয়

  এই দেশে ঘরবাড়ির ছাদ হয় না। চার দেওয়ালের ওপর যে ঢাকনা   বসানো -   তাকে ছাদই বলে সবাই। বিভাস বলে না। যে ছাদে ওঠা যায় না , তাকে বড়জোর চাল বলা যায় - বিভাসের মনে হয়। এখানে কোনোদিন ওর নিজের বাড়ি হলে ঢালা ছাদ থাকবে - ছোটো টবে ফুলগাছ , জলের ট্যাঙ্ক , কল থেকে জল নিয়ে গাছে দেওয়া যাবে ;   দুপুরে তেতে পুড়েও ছাদটা আবার একটা প্ল্যানেটারিয়াম হয়ে যাবে রাতের দিকে। বিভাস থাকে একটা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের দোতলায় - তিনটে ঘর , বাথরুম , রান্নাঘর আর ব্যালকনি।   দরজার উল্টোদিকে অন্য ফ্ল্যাট , মাথার ওপর আরও দুটো , তার ওপরে তিনকোণা ঢালু চাল - সেরামিকের টালি বসানো ,   আর একটা চিমনি। সেইখানে   উঠবার কোনো পথ নেই - তিনতলার অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে সিঁড়িটা শেষ হয়ে গেছে দুম করে। টালি রং করতে , চিমনি পরিষ্কার করতে মই লাগাতে হয়। হারনেস লাগিয়ে রং মিস্ত্রি   তরতরিয়ে ওঠে নামে। এ দেশে আসার পরে প্রথম প্রথম বিভাস একবার   মই তে চড়ে ঢালু চালের রকম সকম দেখে আসবে ...