Posts

Showing posts from 2010

যাপনকাল

Image
'Once I was the past and the future, now I am only the present, today, the moment, and that is hard to bear, with no past, no future...' ১ আকাশ ছিল না। উপুড় করা চ্যাপ্টা বাটি পৃথিবীর ওপর। যা আকাশ নয়। অথচ পাখি ছিল, ডানা ছিল। একঝাঁক পাখি-ক্লান্ত অধৈর্য- ডানা মেলার খোঁজে একদিন ধাক্কা দিতে শুরু করল সেই উপুড় অর্ধগোলকে। আকাশ ভাসে না তবুও। তারা তখন তাদের চঞ্চু দিয়ে, চঞ্চুধৃত বৃক্ষশাখা দিয়ে -যে যেমন পারল-ধাক্কা দিতেই লাগল অনড় আকাশে- মাটিতে পা, চঞ্চু ঊর্দ্ধমুখী-লক্ষ ডানা ঝাপটাচ্ছে একযোগে - অবশেষে ভাসল আকাশ। উঁচুতে, আরও উঁচুতে, পাহাড় পর্বতের মাথা ছাড়িয়ে অনেক অনেক উঁচুতে। নাগালের বাইরে। বাতাসে জাগল ডানার শব্দ, সূর্যের আলো চুঁইয়ে ঢুকল প্রথমে, তারপর ভাসিয়ে নিয়ে গেল পৃথিবীর অন্ধকার। অনেক অনেক নিচে পড়ে রইল, তারপর হালকা হতে হতে মিলিয়েই গেল নিরুদ্ধনি:শ্বাস যাপন।।। ক্লান্তিদিন ।।। আরো অনেক গল্প বলত জন। বুড়ো জন। সেই সময়ের গল্প। যখন পৃথিবী সদ্যোজাত। প্রাণহীন মাটি। মাটির নিচে চাঁদ, তারা, সূর্য। অস্থিমজ্জা, চর্ম, রোমরাজি,পালক এবং ডানার জালিকা। ঘুমন্ত। নিদ্রা আর জাগর-সময়ে ভেদ ছ

শঙ্খপুরীর রাজকন্যা এবং অন্যান্য

বিপুল দাস; শঙ্খপুরীর রাজকন্যা (কলকাতা ঃ আনন্দ পাবলিশার্স, ২০০৫ ); পৃষ্ঠাসংখ্যা ৩০৮; মূল্য একশ পঞ্চাশ টাকা; আই এস বি এন ৮১-৭৭৫৬-৫১৬-৮ লেখকের অন্যান্য  গদ্য - এ' লেখায় আলোচিত ঃ বুল্টির নীল ফ্রক;  দেশ পত্রিকা (২০০৩, ১৭ অগাস্ট), পৃষ্ঠা ৫২ -৫৮ রক্তমাংসের পোকা; দেশ পত্রিকা (২০০৫, ২ মার্চ ),  পৃষ্ঠা ৫০ -৫৫ তৃষ্ণা-বলয়; দেশ পত্রিকা (২০০৫, ১৭ নভেম্বর ),  পৃষ্ঠা ৭০ -৭৭     যদিও দৈনন্দিন ছিল । যেমন থাকে । উত্থান পতন। সাংসারিক শব্দগুচ্ছ। ফ্লাইওভার, শপিং প্লাজা, সঙ্গে অবশ্যম্ভাবী থার্ড রেল। স্কাইস্ক্র্যাপারের মাথায় ঘোলাটে চাঁদ -নিয়নসাইনে ম্লান। অথচ, সুষনি শাক ছিল না। শাঁখারি ছিল না। রঙীন ফানুস, রাজকন্যা, ময়ূরপঙ্খি নাও-ছিল না। অসম্ভব ছিল অলৌকিক মিউজিক, সাইকেলের প্যাডেল বেয়ে নামা দাবনার দাপট অথবা কামনা।  বেঁচে থাকার সুখ। বীজতলা কিম্বা চাঁদসূর্যের আকাঙ্খা। ছিল না বিষাদজলে জেগে থাকা দোলনচাঁপাটি। অথবা একটি পাঁচকোণা তারা। তার অভ্যন্তরে আকাশপ্রদীপ -গৃহস্থের গোপন বাসনা। ছিল না। আবার ছিলও তো। আর কোনোখানে। অন্য কোথাও।  বিপুল নিয়ে এলেন তাঁর গদ্যে।  বিপুল দাস।  ১৯৭৪এ 'পাহাড়তলি' পত্রিকায় ল

মজলিশ ২০১০

প্রিয় মজলিশি, প্রাত্যহিকতায় বসত করে যে অ-প্রাত্যহিকতা, তুমি তাকে চিনে নাও? কখন্‌ দৈনন্দিন গ্রাস করে নেয় তোমার অলীকমুহূর্তসকল? আবার খুঁজে পাও। পাও তো? দৈনন্দিনেই। কিম্বা অপ্রাত্যহিকতায়। তুমি জানো। হাইওয়ে থেকে বাঁহাতি একজিট্‌। সামান্য এগোলে রাউন্ড অ্যাবাউট। গতানুগতিক। যেমনটা দেখা যায়। ডানদিকে টার্ন নিলে স্লোপ। রাস্তা খাড়াই । রাউন্ড অ্যাবাউট থেকে যখন পা রাখছ এ রাস্তায় অথবা গাড়ির চাকা, সেই মুহূর্তে জানছই না কোথায় যাচ্ছ। উঁচু রাস্তা। ব্যাস-এটুকুই দেখছ শুধু। হাল্কা দম নিয়ে পা রাখছ খাড়াই পথে অথবা অ্যাক্সিলেটরে পায়ের চাপ বাড়াচ্ছ খাড়াই পার হতে। হঠাৎই ভেসে আসছে সমুদ্রগন্ধ।শুনতে পাচ্ছ সমুদ্রগর্জন। তোমার মনে হচ্ছে-কি জানি কেন মনে হচ্ছে-তুমি নিজেই জানো না কেন ভাবছ এই খাড়াই পেরোলেই সামনে সমুদ্দুর। এই পথ তোমাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে তোমার চেনা কোনো সমুদ্রপথের কথা। হয়তো।আবার হয়তো তুমি ছুটি চাইছ মনে মনে । তাই মনে আসছে সমুদ্র। যেখানে ছুটি কাটাতে চাও তুমি। আবার প্রতিদিন দু বেলা এ পথ যদি পার হতে হয়, তোমার মনে আসবেই না সামনে সমুদ্দুর। স্পীড লিমিট নিয়ে সচেতন হবে ঢালুতে নামতে আর তিন কিলোমিটার গিয়ে লেফট লেন নে

সব চরিত্র কাল্পনিক

ইন্দ্রনীল, তোকে এচিঠি লেখা ডিউ ছিল আমার বহুদিন। তোকে বলার ছিল অনেক। সিনেমা দেখার আগেই পড়ে ফেলেছি তোর এই প্রগাঢ় মায়াময় গদ্য। পড়লাম প্রতিভাসের 'কবিতা প্রতিমাসে'-সেপ্টেম্বর ২০০৯ সংখ্যায় শঙ্করলাল ভট্টাচার্য, রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিরুদ্ধ ধর, হিরণ মিত্র। R্তুপর্ণ ঘোষের সাক্ষাত্কার। জয় গোস্বামীরও। সংক্ষিপ্ত যদিও। ঐ একই সংখ্যায়। শঙ্করলাল স্পষ্টই জানিয়েছেন তিনি দেখেননি সিনেমাটি। আলোচনা করেছেন সিনেমা কখন কবিতা হয়ে যায়।গোদারের কথা এসেছে, এসেছে 'পিয়েরো লা ফ্যু'।আলোচনার সূত্রে, অবশ্যই। গল্প শুনিয়েছেন,উদাহরণ স্বরূপ। ইতালীয় ছবি ইল পোস্তিনোর গল্প- যেখানে নেরুদার অজ্ঞাতবাসে তাঁকে নিয়মিত চিঠি দিতে আসছে এক ডাকপিয়ন। জানতে পারছে, কবির পরিচয়। গড়ে উঠছে আশ্চর্য সম্পর্ক-ডাকপিয়ন অধীর অপএক্ষায় থাকে চিঠি দিতে গিয়ে কবির থেকে কবিতা শুনবে কখন। একসময় সে নিজেই কবি হয়ে যায়।রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় লেখা শুরুই করেছেন, 'কবি ও কবিতা নিয়ে জগতে সিনেমা নেই বললেই চলে'।হিরণ মিত্র ধন্ধে পড়লেন 'ঘূর্ণির মতো সময়, যার আগুপিছু ধরা যায় না। যে ঘুরে চলে, অতীত বর্তমান মাখামাখি। ধাঁধা লাগানো, সময় খেল

মুক্তধারার বাঁশীওলা

১৩২৮ বঙ্গাব্দের চৈত্রসংক্রান্তির শান্তিনিকেতন ।'মুক্তধারা' লেখা শেষ হ'ল রবীন্দ্রনাথের। ১৪১৭ বঙ্গাব্দে মুক্তধারার প্রাসঙ্গিকতা বিচারে বসেছে সে। মাঝখানে প্রায় নব্বই বছর। প্রাত্যহিকতায়, জীবনচর্যায় মুক্তধারার চরিত্রসমূহের, রূপকের ওতপ্রোত অস্তিত্ব বা অনস্তিত্ব প্রমাণ করবে মুক্তধারার প্রাসঙ্গিকতা। সে পারিপার্শ্বিক জীবনচর্যার সঙ্গে মিলিয়ে নিতে চেষ্টা করবে মুক্তধারার রূপক। খুঁজবে শিবতরাই, উত্তরকূট তার দৈনন্দিনে। এই দৈনন্দিন, তার চর্যা যে এমন-যা দেখে সে তার চতুর্পার্শ্বে- তার কর্মক্ষেত্রে, তার দৈনন্দিনে, যা পড়ে সে-মিডিয়ায় , দ্রুত চোখ বুলিয়ে যাওয়া পেপারব্যাকে অথবা নিছক ব্লার্বে-মুক্তধারার চরিত্রদের অস্তিত্ব কি কোথাও প্রত্যক্ষ করেছে সে? কোথাও? কোনো অনুষঙ্গে তার কি কখনও মনে এসেছে শিবতরাই?অভিজিৎকে খুঁজেছে সে কখনও? তার দৈনন্দিনে? অথবা পেয়েছে খুঁজে?বিভূতিকে দেখেছে? শুভ্র বস্ত্র লুটিয়ে কেউ কি ডেকে যায়-'সুমন! আমার সুমন!'? নব্বই বছরে জীবনচর্যা বদলেছে। আমূল। বঙ্গাব্দ শব্দটি-ই বিদায় নিয়েছে দৈনন্দিন থেকে। নেই চৈত্রসংক্রান্তিও। আছে শপিং প্লাজা, মাল্টিপ্লেক্স, সেলফোন, আইপড। রিয়ালিটি শো।