সব চরিত্র কাল্পনিক
ইন্দ্রনীল,
তোকে এচিঠি লেখা ডিউ ছিল আমার বহুদিন। তোকে বলার ছিল অনেক।
সিনেমা দেখার আগেই পড়ে ফেলেছি তোর এই প্রগাঢ় মায়াময় গদ্য। পড়লাম প্রতিভাসের 'কবিতা প্রতিমাসে'-সেপ্টেম্বর ২০০৯ সংখ্যায় শঙ্করলাল ভট্টাচার্য, রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিরুদ্ধ ধর, হিরণ মিত্র। R্তুপর্ণ ঘোষের সাক্ষাত্কার। জয় গোস্বামীরও। সংক্ষিপ্ত যদিও। ঐ একই সংখ্যায়। শঙ্করলাল স্পষ্টই জানিয়েছেন তিনি দেখেননি সিনেমাটি। আলোচনা করেছেন সিনেমা কখন কবিতা হয়ে যায়।গোদারের কথা এসেছে, এসেছে 'পিয়েরো লা ফ্যু'।আলোচনার সূত্রে, অবশ্যই। গল্প শুনিয়েছেন,উদাহরণ স্বরূপ। ইতালীয় ছবি ইল পোস্তিনোর গল্প- যেখানে নেরুদার অজ্ঞাতবাসে তাঁকে নিয়মিত চিঠি দিতে আসছে এক ডাকপিয়ন। জানতে পারছে, কবির পরিচয়। গড়ে উঠছে আশ্চর্য সম্পর্ক-ডাকপিয়ন অধীর অপএক্ষায় থাকে চিঠি দিতে গিয়ে কবির থেকে কবিতা শুনবে কখন। একসময় সে নিজেই কবি হয়ে যায়।রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় লেখা শুরুই করেছেন, 'কবি ও কবিতা নিয়ে জগতে সিনেমা নেই বললেই চলে'।হিরণ মিত্র ধন্ধে পড়লেন 'ঘূর্ণির মতো সময়, যার আগুপিছু ধরা যায় না। যে ঘুরে চলে, অতীত বর্তমান মাখামাখি। ধাঁধা লাগানো, সময় খেলা, সম্পর্ক খেলা।'চন্ডী মুখোপাধ্যায় বলছেন-কল্পনা নয়, স্মৃতে আত্ম অণ্বেষণ।অনিরুদ্ধ ধর অন্তকথনে স্পষ্টই লিখলেন, 'আসলে শেষ পর্যন্ত সিনেমা হ'ল সিনেমাই, এবং কবিতা হল কবিতা।সিনেমার যেমন কবিতা হয়ে ওঠার দায় নেই, তেমন কবিতারও সিনেমার গা ঘেঁষে থাকার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।'
দেখার আগেই এত কিছু পড়ে ফেলা আমার। বন্ধুজনের দর্শনপ্রতিক্রিয়া, কবির সাক্ষাত্কার, পরিচালক -কবির কথোপকথন। ফলত: নিজে থেকেই ভেবে নেওয়া এটা সেটা। সাত পাঁচ। দেখার আগেই।
অবশেষে দেখলাম। লিখতে দেরী হ'ল। তোকে কিছু বলার ছিল ...
কাগজে আঁচড় দিতে পারি না আজকাল। শাদা কাগজ। কলম ছোঁয়াচ্ছি। শাদা কাগজ, লেখার কাগজ কি করে হয়ে যাচ্ছে ব্লটিং পেপার। শুষে নিচ্ছে কলমের কালি। একটা গাঢ় নীল বিন্দু প্রথমে । তারপর বড় হচ্ছে বড় হচ্ছে .. সমস্ত কাগজটাই নীল হয়ে যাচ্ছে একটা সময়। ব্যস্ততা, বিষাদ, ক্লান্তি। পারিপার্শ্বিক।প্রবাস। পৌন:পুনিকতা।দৈনন্দিনের অ্যাকোয়ারিয়াম।
তলদেশে নীলচে বেগুণী নুড়ি, নয়নশোভন জলজ গুল্ম, শেকড়বিহীন। সাঁতরে চলে বাহারি মাছ।শ্যাওলাহীন তার পৃষ্ঠদেশ। রঙীন চকচকে আঁশ। দানা গিলে নেয় এক দুই তিন। সাঁতার কাটে। অগভীর ক্লোরিন জল। এদিক থেকে ওদিক,ওদিক থেকে এদিক। এ দেওয়াল থেকে সে দেওয়াল তক। ও দেওয়াল থেকে এ দেওয়াল। কাচ দেওয়াল।বুড়বুড়ি কাটে । ভালো থাকে। একদিন চিত্ হয়ে ভেসে উঠবে বলে।
মেয়েটিও ঢুকে গেছিল বাহারি জলপাত্রে সেই কবে। ছবির একদম গোড়ায়। মনে আছে?
সেই যে নিরবলম্ব কাঠপুতুলসমূহ -বন্ধ জানলা। আধো অন্ধকার ঘরে যেদিন লিখল- A littlr river/Twists and Turns ইংরিজিতেই বলল আলিস্যি করে ওরিজিনাল কিছু লেখে নি ক্রিয়েটিভ রাইটিংএর ক্লাসে। বাংলা কবিতা একটা। তর্জমা করে তুলে দিয়েছে খাতায়।
চিনে নিলাম ঝাঁকের কইটিকে। এ মেয়ে অতল দীঘিতে স্বচ্ছন্দ হবে না। শ্যাওলায় দমবন্ধ হবে, লতাগুল্ম পথ আটকাবে। এ মেয়ে ক্ষণতরে পা ডোবাবে দুধ আলতায়। ক্ষণতরেই।সিঁথিমৌর থাকবে, কনে চন্দন, ঘিরে থাকবে এয়োতীকুল, উলু, শাঁখ। খলবলে জীয়ল মাছ হাতে নেবে। মুহূর্তকাল। পরমুহূর্তেই তাকে দেখব রঙ্হীন চারদেওয়ালের মধ্যে। ফ্যাটফ্যাটে সাদা আধুনিক বাথরুম, ফসেট, সোপ, নির্দাগ টাইলস। জীয়ল মাছের গন্ধ মুছে নিচ্ছে সালংকারা। চৌকাঠে তার নতুন বর। ঐ ব্যবধানটুকু থেকেই যাবে।
মেয়েটির যে নতুন বর। কবিতা লেখে। আপিস যেতে অনীহা। নতুন বৌকে ট্যাক্সিতে বসিয়ে রেখে সেই যে গেল কোথায়। ক্রিকেট, আড্ডা, বন্ধুসঙ্গ। সাংসারিক বোধবিহীন মানুষ। কবি না হলেও হ'ত।এরকম মানুষ দেখি নি আমরা? অ কবি?
মসৃণ গাল নয় তার, ইংরিজিতে অস্বচ্ছন্দ, 'মাগী' শব্দটি উচ্চারণ করে নির্দ্বিধায়। নন্দর মা, ইস্ত্রিওলার সঙ্গে তুমুল স্বচ্চন্দ অথচ। কথোপকথনে। আলপচারিতায়। অ্যাকোয়ারিয়ামে বসত করে না সে যে। পিঠে তার শ্যাওলা। জানা কথাই, তার সঙ্গে একত্র যাপন হবে না আমাদের। গভীর জল সইবে না। শিকড়বাকড়ে দম আঁটকে মরব। এই যে আমরা। বাহারি মাছ। জলপাত্রে বাস। জানা কথাই আমরা পাগল দেখলে ভয় পাব আর সেই শ্যাওলা পিঠ সোহাগ করলে তীক্ষ্ণকন্ঠ হবো-ঘোষো না, ইট হার্টস।
মেয়েটির যে সখা, তারও বাস ঐ বাহারি জলাধারেই। ত্রুটিহীন। স্মার্ট। মোবাইল। আচ্ছা, একটা পূর্ণ বাংলা বাক্যগঠনও কি শুনলাম তার মুখে? জানা কথাই, এ মেয়ে এই ছেলের সঙ্গে ঘুরবে ফিরবে, সাঁতরাবে। অগভীর জলে স্বচ্ছন্দ সাঁতার। জানাই তো। এ মেয়ে অনিশ্চয়তাকে ভয় পাবে, ইন্সিকিউরিটিকে কাছে আসতে দেবে না। স্বামীর চাকরি ছেড়ে দেওয়ার খবরে আতংকিত , ক্রুদ্ধ, বিষাদগ্রস্ত হবে। এ সব জানা ছিল।
জানা ছিল না এ মাছের চোরা টান। জানা ছিল না এ মেয়ে পাগল দেখে ভয় পায় আপাত:। পাগল তাকে হন্ট করে। লিখিয়ে নেয় কবিতা। সে কবিতার ছত্রে ছত্রে শ্যাওলা পিঠের কথা। সে ভালোবাসে অগাধ জলাশয়। অথচ তা গোপন রেখে দানা গেলা, এ দেওয়াল ও দেওয়াল সাঁতরানো।
শ্যাওলা পিঠের সে একদিন ফিরে যায়।প্রাচীন কোন দীঘিতেই হয়তো। এই যে বাহারি মাছ মেয়েটি-এতদিন গোপন রেখেছিল চোরাটান-এতদিন পরে জীবনে প্রথমবার ঘাই দেয়। খান খান হয়ে যায় জলপাত্র। বেরিয়ে পড়ে সে। সেই নদী-প্রথম দৃশ্যে যা ছিল টুইস্ট অ্যান্ড টার্নের লিটল রিভার ... জানলার কাচে সালংকারা হাত রেখেছিল সে, হাতের পাশে হাত ছিল না কোনো ... শেষ দৃশ্যে পরিষ্কার উচ্চারিত বাংলা-আমাদের ছোটো নদী চলে আঁকে বাঁকে ... হাতের পাশে হাত রয়েছে এবার।ঘাই দিতে ইচ্ছে হ'ল। ভয় পেলাম। জলপাত্র বিচূর্ণ হওয়ার ভয়। শ্যাওলার ভয়, শিকড়ের ভয়।
চোরাটান, ভালোবাসা বুকে চেপে দানা খাই। ব্লটিং শুষে নেয় কলমের কালি।
এই তো। এই বলার ছিল তোকে।
খুব ভালো থাক।
ইন্দ্রাণীদি।
তোকে এচিঠি লেখা ডিউ ছিল আমার বহুদিন। তোকে বলার ছিল অনেক।
সিনেমা দেখার আগেই পড়ে ফেলেছি তোর এই প্রগাঢ় মায়াময় গদ্য। পড়লাম প্রতিভাসের 'কবিতা প্রতিমাসে'-সেপ্টেম্বর ২০০৯ সংখ্যায় শঙ্করলাল ভট্টাচার্য, রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিরুদ্ধ ধর, হিরণ মিত্র। R্তুপর্ণ ঘোষের সাক্ষাত্কার। জয় গোস্বামীরও। সংক্ষিপ্ত যদিও। ঐ একই সংখ্যায়। শঙ্করলাল স্পষ্টই জানিয়েছেন তিনি দেখেননি সিনেমাটি। আলোচনা করেছেন সিনেমা কখন কবিতা হয়ে যায়।গোদারের কথা এসেছে, এসেছে 'পিয়েরো লা ফ্যু'।আলোচনার সূত্রে, অবশ্যই। গল্প শুনিয়েছেন,উদাহরণ স্বরূপ। ইতালীয় ছবি ইল পোস্তিনোর গল্প- যেখানে নেরুদার অজ্ঞাতবাসে তাঁকে নিয়মিত চিঠি দিতে আসছে এক ডাকপিয়ন। জানতে পারছে, কবির পরিচয়। গড়ে উঠছে আশ্চর্য সম্পর্ক-ডাকপিয়ন অধীর অপএক্ষায় থাকে চিঠি দিতে গিয়ে কবির থেকে কবিতা শুনবে কখন। একসময় সে নিজেই কবি হয়ে যায়।রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় লেখা শুরুই করেছেন, 'কবি ও কবিতা নিয়ে জগতে সিনেমা নেই বললেই চলে'।হিরণ মিত্র ধন্ধে পড়লেন 'ঘূর্ণির মতো সময়, যার আগুপিছু ধরা যায় না। যে ঘুরে চলে, অতীত বর্তমান মাখামাখি। ধাঁধা লাগানো, সময় খেলা, সম্পর্ক খেলা।'চন্ডী মুখোপাধ্যায় বলছেন-কল্পনা নয়, স্মৃতে আত্ম অণ্বেষণ।অনিরুদ্ধ ধর অন্তকথনে স্পষ্টই লিখলেন, 'আসলে শেষ পর্যন্ত সিনেমা হ'ল সিনেমাই, এবং কবিতা হল কবিতা।সিনেমার যেমন কবিতা হয়ে ওঠার দায় নেই, তেমন কবিতারও সিনেমার গা ঘেঁষে থাকার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।'
দেখার আগেই এত কিছু পড়ে ফেলা আমার। বন্ধুজনের দর্শনপ্রতিক্রিয়া, কবির সাক্ষাত্কার, পরিচালক -কবির কথোপকথন। ফলত: নিজে থেকেই ভেবে নেওয়া এটা সেটা। সাত পাঁচ। দেখার আগেই।
অবশেষে দেখলাম। লিখতে দেরী হ'ল। তোকে কিছু বলার ছিল ...
কাগজে আঁচড় দিতে পারি না আজকাল। শাদা কাগজ। কলম ছোঁয়াচ্ছি। শাদা কাগজ, লেখার কাগজ কি করে হয়ে যাচ্ছে ব্লটিং পেপার। শুষে নিচ্ছে কলমের কালি। একটা গাঢ় নীল বিন্দু প্রথমে । তারপর বড় হচ্ছে বড় হচ্ছে .. সমস্ত কাগজটাই নীল হয়ে যাচ্ছে একটা সময়। ব্যস্ততা, বিষাদ, ক্লান্তি। পারিপার্শ্বিক।প্রবাস। পৌন:পুনিকতা।দৈনন্দিনের অ্যাকোয়ারিয়াম।
তলদেশে নীলচে বেগুণী নুড়ি, নয়নশোভন জলজ গুল্ম, শেকড়বিহীন। সাঁতরে চলে বাহারি মাছ।শ্যাওলাহীন তার পৃষ্ঠদেশ। রঙীন চকচকে আঁশ। দানা গিলে নেয় এক দুই তিন। সাঁতার কাটে। অগভীর ক্লোরিন জল। এদিক থেকে ওদিক,ওদিক থেকে এদিক। এ দেওয়াল থেকে সে দেওয়াল তক। ও দেওয়াল থেকে এ দেওয়াল। কাচ দেওয়াল।বুড়বুড়ি কাটে । ভালো থাকে। একদিন চিত্ হয়ে ভেসে উঠবে বলে।
মেয়েটিও ঢুকে গেছিল বাহারি জলপাত্রে সেই কবে। ছবির একদম গোড়ায়। মনে আছে?
সেই যে নিরবলম্ব কাঠপুতুলসমূহ -বন্ধ জানলা। আধো অন্ধকার ঘরে যেদিন লিখল- A littlr river/Twists and Turns ইংরিজিতেই বলল আলিস্যি করে ওরিজিনাল কিছু লেখে নি ক্রিয়েটিভ রাইটিংএর ক্লাসে। বাংলা কবিতা একটা। তর্জমা করে তুলে দিয়েছে খাতায়।
চিনে নিলাম ঝাঁকের কইটিকে। এ মেয়ে অতল দীঘিতে স্বচ্ছন্দ হবে না। শ্যাওলায় দমবন্ধ হবে, লতাগুল্ম পথ আটকাবে। এ মেয়ে ক্ষণতরে পা ডোবাবে দুধ আলতায়। ক্ষণতরেই।সিঁথিমৌর থাকবে, কনে চন্দন, ঘিরে থাকবে এয়োতীকুল, উলু, শাঁখ। খলবলে জীয়ল মাছ হাতে নেবে। মুহূর্তকাল। পরমুহূর্তেই তাকে দেখব রঙ্হীন চারদেওয়ালের মধ্যে। ফ্যাটফ্যাটে সাদা আধুনিক বাথরুম, ফসেট, সোপ, নির্দাগ টাইলস। জীয়ল মাছের গন্ধ মুছে নিচ্ছে সালংকারা। চৌকাঠে তার নতুন বর। ঐ ব্যবধানটুকু থেকেই যাবে।
মেয়েটির যে নতুন বর। কবিতা লেখে। আপিস যেতে অনীহা। নতুন বৌকে ট্যাক্সিতে বসিয়ে রেখে সেই যে গেল কোথায়। ক্রিকেট, আড্ডা, বন্ধুসঙ্গ। সাংসারিক বোধবিহীন মানুষ। কবি না হলেও হ'ত।এরকম মানুষ দেখি নি আমরা? অ কবি?
মসৃণ গাল নয় তার, ইংরিজিতে অস্বচ্ছন্দ, 'মাগী' শব্দটি উচ্চারণ করে নির্দ্বিধায়। নন্দর মা, ইস্ত্রিওলার সঙ্গে তুমুল স্বচ্চন্দ অথচ। কথোপকথনে। আলপচারিতায়। অ্যাকোয়ারিয়ামে বসত করে না সে যে। পিঠে তার শ্যাওলা। জানা কথাই, তার সঙ্গে একত্র যাপন হবে না আমাদের। গভীর জল সইবে না। শিকড়বাকড়ে দম আঁটকে মরব। এই যে আমরা। বাহারি মাছ। জলপাত্রে বাস। জানা কথাই আমরা পাগল দেখলে ভয় পাব আর সেই শ্যাওলা পিঠ সোহাগ করলে তীক্ষ্ণকন্ঠ হবো-ঘোষো না, ইট হার্টস।
মেয়েটির যে সখা, তারও বাস ঐ বাহারি জলাধারেই। ত্রুটিহীন। স্মার্ট। মোবাইল। আচ্ছা, একটা পূর্ণ বাংলা বাক্যগঠনও কি শুনলাম তার মুখে? জানা কথাই, এ মেয়ে এই ছেলের সঙ্গে ঘুরবে ফিরবে, সাঁতরাবে। অগভীর জলে স্বচ্ছন্দ সাঁতার। জানাই তো। এ মেয়ে অনিশ্চয়তাকে ভয় পাবে, ইন্সিকিউরিটিকে কাছে আসতে দেবে না। স্বামীর চাকরি ছেড়ে দেওয়ার খবরে আতংকিত , ক্রুদ্ধ, বিষাদগ্রস্ত হবে। এ সব জানা ছিল।
জানা ছিল না এ মাছের চোরা টান। জানা ছিল না এ মেয়ে পাগল দেখে ভয় পায় আপাত:। পাগল তাকে হন্ট করে। লিখিয়ে নেয় কবিতা। সে কবিতার ছত্রে ছত্রে শ্যাওলা পিঠের কথা। সে ভালোবাসে অগাধ জলাশয়। অথচ তা গোপন রেখে দানা গেলা, এ দেওয়াল ও দেওয়াল সাঁতরানো।
শ্যাওলা পিঠের সে একদিন ফিরে যায়।প্রাচীন কোন দীঘিতেই হয়তো। এই যে বাহারি মাছ মেয়েটি-এতদিন গোপন রেখেছিল চোরাটান-এতদিন পরে জীবনে প্রথমবার ঘাই দেয়। খান খান হয়ে যায় জলপাত্র। বেরিয়ে পড়ে সে। সেই নদী-প্রথম দৃশ্যে যা ছিল টুইস্ট অ্যান্ড টার্নের লিটল রিভার ... জানলার কাচে সালংকারা হাত রেখেছিল সে, হাতের পাশে হাত ছিল না কোনো ... শেষ দৃশ্যে পরিষ্কার উচ্চারিত বাংলা-আমাদের ছোটো নদী চলে আঁকে বাঁকে ... হাতের পাশে হাত রয়েছে এবার।ঘাই দিতে ইচ্ছে হ'ল। ভয় পেলাম। জলপাত্র বিচূর্ণ হওয়ার ভয়। শ্যাওলার ভয়, শিকড়ের ভয়।
চোরাটান, ভালোবাসা বুকে চেপে দানা খাই। ব্লটিং শুষে নেয় কলমের কালি।
এই তো। এই বলার ছিল তোকে।
খুব ভালো থাক।
ইন্দ্রাণীদি।
Comments
Post a Comment