Posts

Showing posts from 2008

গেনজি-দ্য ওয়র্ল্ড অফ দ্য শাইনিং প্রিন্স

এক হাজার আট সালে মুরাসাকি শিকিবু লিখেছিলেন রাজকুমার গেনজির কাহিনী। সহস্র বত্সর পূর্ণ হ'ল। গেনজি-দ্য ওয়র্ল্ড অফ দ্য শাইনিং প্রিন্স নামাঙ্কিত প্রদর্শনীটি এই উপলক্ষ্যেই। শুরু হ'ল বারই ডিসেম্বর, চলবে পনেরই ফেব্রুয়ারি অবধি। আর্ট গ্যালারি অফ নিউ সাউথ ওয়েলসের এশিয়ান গ্যালারিতে। প্রবেশ অবাধ। পন্ডিতরা তর্ক করুন,গেনজির উপাখ্যানই প্রাচীনতম উপন্যাস কি না, তুলনায় আসুক প্রথম শতকের ল্যাটিন স্যাটায়ারিকা, তৃতীয় শতকের গ্রীক এথিওপিকা অথবা সপ্তম শতকের সংস্কৃত কাদম্বরী। চুলচেরা বিশ্লেষণ চলুক উপন্যাসের বৈশিষ্ট্যের উপস্থিতি নিয়ে, সাড়ে চারশো চরিত্র সম্বলিত আখ্যানের গঠনগত ও মনস্তাত্বিক জটিলতা নিয়ে। ইয়াশুনারি কাওয়াবাতা নোবেল প্রাইজ অ্যাকসেপ্টেন্স স্পীচে বলুন, "দ্য টেল অফ গেনজি ইজ দ্য হায়েস্ট পিন্যকল অফ জাপানীজ লিটারেচার।" বলুন,আজ অবধি কিচ্ছু লিখতে পারি নি আমরা যা গেনজিকে অতিক্রম করে যায়। আমাদের শ্রবণ দ্বার উন্মুক্ত পন্ডিতের তরে; দর্শনে থাকুন প্রিয়দর্শন রাজকুমারটি-হাজার বছর পার হয়েও এখনও কি অনায়াস প্রভাব ফেলছেন জাপানের শিল্পমাধ্যমে। আমরা অবাক হয়ে দেখি। দেখি আর দেখি। দেখব,সম

শূন্যের ভিতরে ঢেউ

'কোন্‌টা যে প্রেমের কবিতা আর কোন্‌টা নয়, তার ঠিক হদিশ করতে পারি না আমি... তাই কোনো বন্ধু যখন বলেন প্রেমের কবিতা আমি লিখিইনি, কখনো সেই প্রস্তাবে আমার একটা সায়ই থাকে। অথচ, প্রেম ছাড়া লিখেছি আর ক'টা?' শঙ্খ ঘোষ ১ 'আনন্দে চিরায়ু চাও লগ্ন তুমি প্রত্যহের স্রোতে। উদাত্ত প্রান্তর জুড়ে দুপুরের রৌদ্র পায় ছুটি- বুকের অনন্ত ইচ্ছা ছুটে আসে ভূমিগর্ভ হতে দুঃখের সবুজ গুচ্ছে তোমার সম্পূর্ণ হাত দুটি।' তুমি তার নাম জানতে চেয়েছিলে-সে মাথা নেড়েছিল দুদিকে-জানা যায় না, জানা যায় না কিচ্ছু জানা যায় না-তুমি তার ঘ্রাণ পেতে চেয়েছিলে প্রেমে অপ্রেমে, শরীরে, মিলনে,বর্ণ গোচর করতে চেয়েছিলে তুমি-ছুঁতে চেয়েছিলে তাকে.... সে যদি হয় এমন কেউ, যাকে তুমি চেনো। অথবা জানো। হয়তো চেনো, কিন্তু জানো না। কিম্বা জানো, চেনো না। হয়ত একত্রে বসত। এক ছাদের তলায়। কিম্বা সাক্ষাৎ। শুধুই সাক্ষাৎ।কদাচিৎ। হয়তো প্রতিদিন। প্রতিনিয়ত। ভীড়ে। কিম্বা নির্জনে। একান্ত নিভৃতির দর্পণে। হয়তো সে হেঁটে যায়। একা। আর তুমি রয়েছ তোমার নিভৃতির ব্যালকনিতে।অথবা হাঁটছ তার পাশে। সে হাঁটে । ভোর হয়। তুমি তাকে দেখ হেঁটে যেতে তার ছায়ার সঙ্গে।

প্রবাসীর বর্ণমালা

সে হাঁটে। ওভারকোট, ভারী জুতো, মোটা দস্তানা। হাত জড়িয়ে খুকীটি। স্নোসুটে, রামধনু উলের গলাবন্ধে।পায়ের নীচে বরফ। তুষারাবৃত নিষ্পত্র বৃক্ষশাখা। আকাশের রঙে ছাই ওড়ে যেন। সে হাঁটে, সঙ্গে খুকীটি। খুকীর হুডটিতে আলতো হাত রাখে সে-কি ভাবিস খুকী? কি ভাবিস? -Poem, mummy. A poem. Just came to my mind. ************ ই-মেইল ১ মা, অভ্যস্ত হয়ে উঠছি আবার দৈনন্দিন ব্যস্ততায়। বরফে। মেইল করা হয় নি ক'দিন। ভালো আছ তো? খুকী ভালো। আজ পদ্য বাঁধলো মুখে মুখে। তবে ইংরিজিতে। 'Skating on the snow/ on a pair of broken skis/The snow is turning red/ I think , am nearly dead.' সকালের মুডটা ভালো ফুটেছে, বলো? বাংলায় কি ও আরো ভালো এক্সপ্রেস করতে পারতো নিজেকে? জানি না, আমি খুব বেশি জোর করছি কি না এব্যাপারে! বাংলা এখন আর বলতেই চায় না। পরে লিখছি আবার। এখন ইউনিভার্সিটির তাড়া। ই-মেইল ২ অরিত্র, অনেকদিন মেইল করা হয় নি তোকে।কলকাতা থেকে ফিরেছি অনেকদিন।তারপর আবার মানিয়ে নেওয়া রুটিনে, ব্যস্ততাও গেল নানাভাবে। খুকীকে নিয়েও একটু ঝামেলা গেল কদিন। সেরকম কিছু না। আসলে এখন একদম বাংলা বলতে চায় না। সমস্তদিন ডে কেয়ারে কাট

প্রস্তুতিপর্ব

এই খেলাটা একা খেলতে হয়। একা একা। নিজে নিজে। শুধুই নিজের সঙ্গে।খুব কিছু লম্বা নয় খেলার সময়টুকু। আধঘন্টামত।কিছু কমই হয়তো। খেলাটা একদিন নিজেই শুরু করেছিল ও। নিয়মকানুন ঠিক করেছিল। কিম্বা হয়তো খেলতে খেলতেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। শুধু এখনও জানে না খেলা আরম্ভের সময়টা। ঠিক কখন্ শুরু হয়। একটা হুইশলের আওয়াজ হয় কোথাও। কোথাও একটা। আর ও খেলতে শুরু করে দেয়। আজ যেমন, এই যে মধ্যরাত এখন, সব কিছু চুপচাপ,-একটু আগে অন্য একটা খেলা খেলছিল ও। ওরা। সেটা দুজনের খেলা। সে খেলারও নিয়মকানুন আছে। সব খেলার মতই। নিয়মকানুন, শেষ, শুরু। হয়তো একটা ছোঁয়া দিয়ে শুরু হওয়া-হাত কিম্বা ঠোঁট কিম্বা কোমর। জিভ, আলজিভ। কপাল চোখের পাতা গলা বেয়ে বুক। তলপেট ঊরু পায়ের পাতা। আলাপ মধ্যলয় ঝালা। তুমুল ঝালা। খেলা শেষের সিক্ততা, অবসাদ। এই যে এখন, খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে ওরা শুয়ে রইল, -শুয়েই রইল-এর মুখ ওর কণ্ঠার কাছে। নি:শ্বাসের আওয়াজ। বুকের ওঠাপড়া। কাঁধ, গাল আর বালিশ নিয়ে একটা ছোট্ট ত্রিভুজ-তিনকোণা ফোকর একটা-সেখান দিয়ে রাস্তার আলো এসে পড়ল ওর আধবোজা চোখে। ও চোখ খুলল, ঈষত্ ঝাপসা দেখল সব। চোখ পিটপিট করে আবার চোখ বুজল। চোখ খুলল। মা

জন্মের মাটি

'ভোর হবার মুখে আবছা অন্ধকারে ট্যাক্সি এসে হর্ন দেয়। ঘুম অনেক আগেই ভেঙেছিল গায়ত্রীর। সারা রাত বরং ভালো ঘুমই হয়নি তার, এমন এক ঘড়ি ধরে যাত্রার কথা থাকলে চাপা উদ্বেগে যেমন অনেকেরই বার বার ঘুম ভেঙে যায় তেমনই। অন্ধকার থাকতেই স্নান সেরে নিয়েছে সে। সুটকেস আর ব্যাগ তো দু-দিন আগেই গোছানো হয়ে গিয়েছে-গায়ত্রী আর সুধীনের দুটো আলাদা সুটকেস, একটা কিটস ব্যাগ, যার যার নিজস্ব হাতব্যাগ ও কাঁধের ঝোলা। ভোরের বনগাঁ লোকাল ধরবে শিয়ালদা থেকে, সকাল ৫-৩৫ এর গাড়ি।' ঠিক এইভাবেই শুরু হয়েছে শান্তা সেনের 'জন্মের মাটি' উপন্যাস। এমনই বিশদ, এমনই খুঁটিনাটি আর শুরু থেকেই যাত্রাপথের সুরটি বেঁধে দেওয়া যেন। শান্তা সেনের প্রথম উপন্যাস 'পিতামহী' বরিশালের সেই পঞ্চাশের দাঙ্গার সময় , এক বৃদ্ধার কলকাতায় চলে আসার আখ্যান।'জন্মের মাটিতে' সেই বৃদ্ধার পৌত্রী প্রৌঢ়া গায়ত্রী চলেছে বাংলাদেশে-ঢাকা হয়ে বরিশাল যাবে সে-পঞ্চাশের দাঙ্গার পরে যেখানে আর কোনদিন পা রাখে নি সে-সেই দেশের বাড়িখানি একবার দেখতে যাওয়া-বনগাঁ লোকাল ধরে তারপর সীমান্ত পেরিয়ে। সমগ্র লেখাটির উপজীব্য যাত্রাপথের বিশদ, অবশ্যম্ভাবী স্মৃতিচিত্রগুলি