Posts

Showing posts from 2022

দ্য স্পাই হু লাভস মি

  মধ্যদিনে যশোর রোড ঝ্লসে যাচ্ছিল- যেন আধপোড়া ময়াল,  খোলস থেকে ধোঁয়া উঠছে। পুড়ে যাওয়ার যন্ত্রণা, আর্তনাদ আর যতেক ছটফটানি চাপা পড়ে যাচ্ছিল ব্যস্ত ট্রাফিকে। দুপুরের রোদের স্বাভাবিক প্রতিসরণ ঘটছিল। ফলে পোড়া অ্যাসফল্টও ভেজা ঠেকছিল শহরের  চোখে। প্রাচীন সরণিকে নিজের সঙ্গে কানেক্ট করতে পারছিলাম।  এয়ারপোর্টের কাছে একটা গাছতলায় অপেক্ষা করছি - কার্গোতে স্পাইয়ের বডি আসবে, খবর ছিল ;  গত রাতে  আমার কাছে ফোন এসেছিল- স্পাই নেই, আমি যেন এয়ারপোর্টে আসি ।  কে ফোন করেছিল, কোথা থেকে করেছিল জানি না- জানার চেষ্টাও করি নি- কারণ সেরকমই কথা ছিল। আমাকে আমার মতো থাকতে দাও স্টাইলে স্পাই বলত, এই সব মানডেন ব্যাপারে  যত মাথা ঘামাবে, তোমার লেখায় মেদ জমবে তত। কে কী করে, কোথায় থাকে -জেনে কী লাভ। লেখায় মন দাও। সবটুকু। তোমার নিজস্ব একটা শহর হোক, নদী হোক।  আমার কোনো নদী ছিল না, শহরও নয়। অথচ লেখক হতে গেলে নিজস্ব নদী ও শহর থাকা  জরুরী। এসব কথা আমাকে সে বলেছিল। স্পাই। গুপ্তচর শব্দটা সে পছন্দ করত না, বড্ড ভারি আর আড়ম্বরপূর্ণ- কত বেশি বলা আছে;  বলত,  “স্পাই কত হালকা শব্দ- ভাওয়েল অবধি নেই- চড়াইপাখির মতো -ফুরুৎ করে এই ডালে বসল ,

সোয়ান লেক

  মরা মানুষদের জন্মদিনে, তাদের ছবির তলায় মোম রেখে পিছন ফিরলে নিজের দীর্ঘ ছায়ার মুখোমুখি হতে হয় বরাবর। তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। তবে, প্রমীলার আজকাল মনে হয়, এই ছায়াটাও শিগগিরই গায়েব হয়ে যাবে। তারপর হয়তো একটা নতুন ছায়া  আসবে অথবা শূন্যতা। জাস্ট ভয়েড স্পেস। আসলে সব মানুষের মধ্যে একটা মরা মানুষ থাকেই, খোলসগুলো ঝরে ঝরে শেষমেষ ঐ ডেডবডিতে পৌঁছে  যেতে হয়।  মোম জ্বালতে এলে এই সব মনে হয় ইদানিং, যা তাকে ক্ষণিক বিবশ করে। আজও করল, তবে হাতও অবশ হ'ল সেইসঙ্গে,  ফলে মুঠি থেকে মোমদানি স্লিপ  করে  আগুন ধরে গেল শ্যামলেশের ছবির সামনের কার্পেটে। দপ করে নীল শিখা লাফ দিল যেন এই ছুঁয়ে ফেলবে শ্যামলেশের ছবি অথবা প্রমীলার শাড়ির পাড়ের সোনালি বর্ডার।  দীর্ঘ প্রবাসজীবনে প্রমীলা আগাগোড়া শাড়িতে  -  ঘরে ও বাইরে,  বরফে, জলে ,কাদায়, এবড়ো খেবড়ো ট্রেলে এবং অবশ্যই যৌবনে বিবিধ নাচের অনুষ্ঠানে; শাড়ি সামলানোর টেকনিক তার রিফ্লেক্স অ্যাকশনে পর্যবসিত বহুদিন, তদুপরি অতীতের নৃত্যচর্চা ,বর্তমানের হাল্কা ব্যায়াম তাকে সচল ও ক্ষিপ্র রেখেছিল ; ফলে চকিতে শাড়ির কুঁচি কার্পেটের উপরিভাগ থেকে তিন আঙুল পরিমাণ টেনে তুলল সে , বারান্দার দিক থ

কুহক

  সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার ঠিক আগে মানুষ একটা ছবি হাতে নেয় ;   ফ্রেম থেকে খুলে , হাতের মুঠোয় পাকিয়ে ফেললে গোটানো ক্যানভাসকে রিলে দৌড়ের ব্যাটনের মত লাগে । তারপর কোথাও হুইশল বাজে , ব্যাটন হাতে সে এবার এক পা দু পা করে পিছু হটতে শুরু করে ; একটু থামে , হাতের ছবি খুলে কিছু দেখে , পিছোয় আবার ; তারপর হাঁটার গতি বাড়ে ,   একটা সময় স্প্রিন্ট টানে সে , উল্কার বেগে সম্পর্ক থেকে বহু দূরে চলে যায়। প্রতিটি শেষ হওয়া সম্পর্কের সঙ্গে একটা করে ছবি থাকে - আমার এরকম মনে হয় ;   ফ্রেমহীন ছবি সব - হয়তো পুরোনো সম্পর্কের ওয়াটার কালার - লাল রঙে চুবিয়ে তোলা ,   কিম্বা পরের সম্পর্কের   ঝকঝকে প্রিন্ট - গ্লসি ফিনিশ;   অথবা হয়তো গোটাটাই অ্যাবস্ট্রাক্ট -   একটা অবয়ব হয়তো , আপাতদৃষ্টিতে যাকে মনে হয়   নৃত্যরত মানুষ , ডানা ঝাপটানো রাজহাঁস , ছুটন্ত ঘোড়া - কেশর উড়ছে ;   অথবা জাস্ট অন্ধকার , পিচ ডার্ক শূন্যতা। সম্পর্ক পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবার পরে , এই সব ছবিদের আল্টিমেটলি কী হয় শান্তিপিসির মরে যাওয়া অবধি আমার