অরফ্যানগঞ্জ
পা য়ের নিচে মাটি তোলপাড় হচ্ছিল প্রফুল্লর— ভূমিকম্পর মত। পৃথিবীর অভ্যন্তরে যেন কেউ আছাড়ি পিছাড়ি খাচ্ছে— সেই প্রচণ্ড কাঁপুনিতে ফাটল ধরছে পথঘাট, দোকানবাজার, বহুতলে। পাতাল থেকে গোঙানির আওয়াজ আসছিল। ঝোড়ো বাতাস বইছিল রেলব্রিজের দিক থেকে। প্রফুল্ল দোকান থেকে বেরিয়ে নেতাজি মূর্তির দিকে দৌড়ল। চশমা চোখে টুপি মাথায় ফ্যাটফ্যাটে সাদা নেতাজি সেই কবে থেকে চৌমাথার মোড়ে— হাত, পা, ঘোড়াবিহীন। ছোটবেলায় প্রফুল্ল আর হেমন্ত বাবার হাত ধরে মূর্তির সামনে পতাকা তোলা দেখত; উঠো গো ভারতলক্ষ্মী গান হত। পুনঃ কনক-কমল-ধন-ধান্যে গাইতে গাইতে প্রফুল্ল ভাবত, ওদের পাড়ার মাটির তলায় ঘড়া ঘড়া মোহর রয়েছে আর নেতাজির মূর্তি আসলে জাস্ট একটা ছিপি— প্যাঁচ খুলে সরিয়ে নিলেই লাখে লাখে মোহর বেরিয়ে আসবে ফোয়ারার মত। তারপর মোহরের বন্যা— মোহরে মোহরে ডুবে যাবে এ পাড়ার পথঘাট, খানাখন্দ, ঘরদোর, শ্যাওলাধরা উঠোন— একটা মানুষ দাঁড়ানোর জায়গাও থাকবে না। নায়কের সেই সিনটার মত যেন— টাকায় টাকায় ডুবে যাচ্ছে উত্তমকুমার। এই সব বড় ভয়ের কথা— ভাবতে গেলে বুক কাঁপে প্রফুল্লর সেই ছোটবেলা থেকে। তারপর চারপাশের বাতাস কমে গিয়ে দম বন্ধ লাগে। বিনবিন করে ঘাম হয়। তখন শা