প্রাণগোপাল
রাস্তার আলো সামান্য ত্যারছা হয়ে লিপির শরীরে পড়েছে; ওর লম্বা ছায়া সরু গলির ওদিকের ফুটপাথ পর্যন্ত নিতান্ত অদরকারি ভাঙাচোরা এক সাঁকো তৈরি করেছে তার ফলে। এখন গভীর রাতে বড়রাস্তায় গাড়ির আওয়াজ প্রায় নেই। একটা দুটো হেডলাইট লেভেল ক্রসিং পেরিয়ে ওদের পাড়ার দিকে আসছে; সে আলোয়, ছায়ার সাঁকো ভেঙে গিয়ে নদী হয়ে যাচ্ছে, তারপর আবার জুড়ছে, ভাঙছে, আবার জুড়ে যাচ্ছে। মাঘের হাওয়া লিপির মুখের বাঁদিক কেটে নিলেও ছায়া নির্বিকার । ফলে লিপির নিজেকে আরো একা লাগছে। লিপি দাঁড়িয়ে আছে বাড়ির সামনে, যে বাড়িতে গোপাল, অনিমেষ আর সে ছিল গতপরশু অবধি। এই মুহূর্তে বাড়িতে কেবল লিপি আর গোপালের খাঁচা, অনিমেষ ট্যুরে, আজ ফিরবে। অনিমেষ এখনও শূন্য খাঁচার কথা জানে না। ট্রেনের হুইশল কানে এল লিপির। চাদর দিয়ে আরও ঘন করে কান, মুখ ঢাকল , তারপর নিজেকে নিজেই আঁকড়ে ধরল দু’ হাতে দুই কনুই ছুঁয়ে। ফুলশয্যায় অনিমেষ নিজেকে ইন্ট্রোভার্ট বলেছিল প্রথমে। নিজেকে রাগী বলেছিল; ওর তেমন কোনো বন্ধু নেই, বলেছিল সে কথাও। তারপর লিপিকে গোপালের কথা বিশদে বলে। বস্তুত, লিপির বাবার ক্যান্সার ধরা পড়ার দুমাসের মধ্যে, তাড়াহুড়োয় সম্বন্ধ করে বিয়ে; অনিমেষের মামার বাড়িতে