সূর্যমুখীর এরোপ্লেন
সূর্যমুখীকে অনেকদিন পরে এয়ারহস্টেসের মতো দেখাচ্ছে আবার। লম্বা গর্বিত গ্রীবা, কনুই অবধি ব্লাউজের হাতা, চোয়ালের কাছে মৃদু টেনশন— যেন একটু পরেই টেক্ অফ্, আর এই স্বল্প সময়ে ওভারহেড লকার বন্ধ করা, সেফটি ব্রিফিং এইসব কত কী হাসিমুখে সেরে ফেলতে হবে। সূর্যমুখীর পায়ের কাছে হ্যান্ডব্যাগ, হাতে একটা নীলচে রুমাল— আলতো ক’রে কপাল মুছে নিতে দেখলাম একটু আগে। আসলে, কলকাতার হাসপাতালে অঙ্কোলজিস্টের চেম্বারে বসে শাশুড়ির দিকে তাকিয়ে আছি। আমার পাশেই সূর্যমুখী, আমার শাশুড়ি। সামনে ডাক্তার কথা বলছেন অনর্গল— মাঝে মাঝে লিখছেন, হিজিবিজি কাটছেন নোটপ্যাডে। সম্ভবত একই কথা নানাভাবে বলে চলেছেন— প্যালিয়েটিভ, মির্যাকল, আর ভগবান কানে এল শুধু। আমার মন অন্যখানে— পুরনো সব কথা ভাবছিলাম। সূর্যমুখীও আদৌ শুনছিলেন না; চোখ দেখে বুঝতে পারছিলাম, অন্য কিছু ভাবছেন, একদম অন্য কোনও কথা কারণ সূর্যমুখীর চোখে এখন বিয়েবাড়ির রোশনাই– সূর্যমুখীর শ্বশুরবাড়ি কলকাতা থেকে দূরে, মফস্সলে। পঁচিশ বছর আগে সে’ বাড়িরই দোরগোড়ায় জীয়ল মাছ হাতে নিয়ে আমি দাঁড়িয়ে আছি তো দাঁড়িয়েই আছি— আমার মাথায় শোলার মুকুট, সিঁথি জুড়ে লাল, আর দুধে আলতায় ভরা কষ্টিপাথরের থাল