জন্মের মাটি
'ভোর হবার মুখে আবছা অন্ধকারে ট্যাক্সি এসে হর্ন দেয়। ঘুম অনেক আগেই ভেঙেছিল গায়ত্রীর। সারা রাত বরং ভালো ঘুমই হয়নি তার, এমন এক ঘড়ি ধরে যাত্রার কথা থাকলে চাপা উদ্বেগে যেমন অনেকেরই বার বার ঘুম ভেঙে যায় তেমনই। অন্ধকার থাকতেই স্নান সেরে নিয়েছে সে। সুটকেস আর ব্যাগ তো দু-দিন আগেই গোছানো হয়ে গিয়েছে-গায়ত্রী আর সুধীনের দুটো আলাদা সুটকেস, একটা কিটস ব্যাগ, যার যার নিজস্ব হাতব্যাগ ও কাঁধের ঝোলা। ভোরের বনগাঁ লোকাল ধরবে শিয়ালদা থেকে, সকাল ৫-৩৫ এর গাড়ি।' ঠিক এইভাবেই শুরু হয়েছে শান্তা সেনের 'জন্মের মাটি' উপন্যাস। এমনই বিশদ, এমনই খুঁটিনাটি আর শুরু থেকেই যাত্রাপথের সুরটি বেঁধে দেওয়া যেন। শান্তা সেনের প্রথম উপন্যাস 'পিতামহী' বরিশালের সেই পঞ্চাশের দাঙ্গার সময় , এক বৃদ্ধার কলকাতায় চলে আসার আখ্যান।'জন্মের মাটিতে' সেই বৃদ্ধার পৌত্রী প্রৌঢ়া গায়ত্রী চলেছে বাংলাদেশে-ঢাকা হয়ে বরিশাল যাবে সে-পঞ্চাশের দাঙ্গার পরে যেখানে আর কোনদিন পা রাখে নি সে-সেই দেশের বাড়িখানি একবার দেখতে যাওয়া-বনগাঁ লোকাল ধরে তারপর সীমান্ত পেরিয়ে। সমগ্র লেখাটির উপজীব্য যাত্রাপথের বিশদ, অবশ্যম্ভাবী স্মৃতিচিত্রগুলি